অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
ভেঙে পড়া অর্থনীতি এখন নতুন উচ্চতায়। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক চমক দেখিয়ে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকার। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ইতিমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে দুই মিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে লক্ষণীয়ভাবে, ফিরেছে বিনিয়োগকারীদের আস্থা। অনেকেই বলছেন এ যেন অর্থনীতিতে লেগেছে এক জাদুকরী ছোঁয়া।
রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন ড. ইউনুস। দায়িত্ব নিয়েই তিনি নেমে পড়েন রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাত সংস্কারে। তাঁর মূল লক্ষ্য ছিল অর্থনীতিকে স্থিতিশীল ও শক্তিশালী করে তোলা। সাবেক সরকারের সময় ব্যাপক দুর্নীতি, লুটপাট এবং অর্থপাচারের ফলে অর্থনীতি প্রায় ধ্বংসের মুখে ছিল। কিন্তু ড. ইউনুস দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দৃশ্যপট পাল্টাতে শুরু করে। আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে, ২০২৩ সালের জুলাইয়ে আইএমএফ-এর হিসাব অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২০.৪ বিলিয়ন ডলার। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১.৪০ বিলিয়ন ডলারে। গ্রোস রিজার্ভও এখন ২৭ বিলিয়নের কাছাকাছি।
সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বৈদেশিক দেনা ছিল প্রায় ৩৯,০০০ কোটি টাকা। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০,০০০ কোটি টাকায়। অর্থাৎ মাত্র আট মাসে এই খাতে ২৯,০০০ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করেছে সরকার, যা একটি বড় অর্জন।
সম্প্রতি আয়োজিত 'বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট'–এ ৪০টি দেশের ৬০০’র বেশি বিনিয়োগকারী অংশ নেন। বিশ্বের বিভিন্ন বড় কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে চীনের হান্ডা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বাংলাদেশে ১৫০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে চুক্তি করেছে। এছাড়াও ড. ইউনুসের সাম্প্রতিক চীন সফর দেশের অর্থনীতিতে এনেছে নতুন মাত্রা। সফর শেষে চীন থেকে এসেছে ২১০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ ও ঋণের প্রস্তাব, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। প্রযুক্তি ও সেবা খাতেও বাড়ছে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ। বর্তমানে এসব খাতে একাধিক বিনিয়োগ আলোচনা পর্যায়ে রয়েছে।
মাত্র আট মাসেই ড. ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা দেশের ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। নতুন উদ্যমে বাংলাদেশ আজ পৌঁছে গেছে এক ভিন্ন উচ্চতায় বিশ্ব মানচিত্রে তৈরি হচ্ছে এক শক্ত অবস্থান। ●
অকা/প্র/ই/সকাল, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 3 weeks আগে