অর্থকাগজ প্রতিবেদন

চলতি আগস্ট মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্সের প্রবাহ ইতিবাচক ধারা বজায় রেখেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, আগস্টে দেশে এসেছে প্রায় ২.৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। টাকায় এর অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ২৯ হাজার ৫০০ কোটি। এর আগের মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২.৪৮ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ আগস্টে কিছুটা কমলেও পুরো বছরের শুরুতে ধারাবাহিক প্রবাহ বজায় আছে।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস, অর্থাৎ জুলাই ও আগস্ট মিলিয়ে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৪.৯ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ প্রবাহ ছিল প্রায় ৪.১৪ বিলিয়ন ডলার। ফলে এ বছর শুরুতেই রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ। অর্থনীতিবিদদের মতে, এই প্রবৃদ্ধি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহে স্থিতিশীলতা আনতে বড় ভূমিকা রাখছে।

গত অর্থবছর ২০২৪-২৫ সালে রেমিট্যান্স প্রবাহে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। পুরো বছরে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৩০.৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের (২০২৩-২৪) ২৩.৯১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশে এক অর্থবছরে এর আগে কখনো এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। এই প্রবাহ দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তির অন্যতম উৎস। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ, আমদানি ব্যয় মেটানো এবং রিজার্ভ ধরে রাখতে এটি বড় সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে যখন বিশ্ববাজারে ডলারের দাম অস্থির, তখন প্রবাসী আয়ের ধারাবাহিক প্রবাহ টাকার মান স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করছে। একই সঙ্গে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স আসায় হুন্ডি নিরুৎসাহিত হচ্ছে, যা আর্থিক প্রবাহকে স্বচ্ছ করছে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, যদি প্রবাসী আয়ের এই ধারা অব্যাহত থাকে, তবে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শেষে রেমিট্যান্স প্রবাহ নতুন রেকর্ড তৈরি করতে পারে। এতে শুধু বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহই বাড়বে না, বরং গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভোগ ও বিনিয়োগের প্রসার ঘটবে, যা সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
অকা/ব্যাংখা/ই/সকাল/২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ

সর্বশেষ হালনাগাদ 2 weeks আগে

Leave A Reply

Exit mobile version