অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
বিশ্বের শীর্ষ ১০০ বন্দরের তালিকায় গত বছরও একই অবস্থানে ছিল দেশের একমাত্র চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরটি। বিশ্বের বন্দরগুলোর কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা হিসাব করে এ তালিকা প্রকাশ করে থাকে লন্ডনভিত্তিক শিপিংবিষয়ক সবচেয়ে পুরনো সংবাদমাধ্যম লয়েডস লিস্ট। ২০২৩ সালের পণ্য ওঠানামার তথ্য বিবেচনায় নিয়ে সম্প্রতি ‘ওয়ান হান্ড্রেড পোর্টস ২০২৪’ শীর্ষক বিশেষ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এ তালিকায় এবারো শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে চীনের সাংহাই সমুদ্রবন্দর। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের আগে রয়েছে ভারতের দুটি বন্দর। এর মধ্যে মুন্দ্রা বন্দরের অবস্থান ২৪ নম্বরে, আর জওহরলাল নেহরু বন্দর আছে ২৭ নম্বরে।
চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তারা জানান, বিশ্বের বন্দরগুলোর কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা হিসাব করে শীর্ষ ১০০ বন্দরের তালিকা করা হয়েছে। এ েেত্র বন্দরগুলোর সেবার মান বিবেচনায় নেয়া হয়নি। তবুও বৈশ্বিক তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দরের এগিয়ে বা পিছিয়ে যাওয়ার সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিফলন পাওয়া যায়। কারণ কনটেইনারে আমদানির বড় অংশই শিল্পের কাঁচামাল। আবার রফতানি পণ্যের পুরোটাই কনটেইনারে পরিবহন করা হয়। তার মানে কনটেইনার পরিবহন কমলে শিল্পের উৎপাদনও কমে যায়।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ও দেশের অভ্যন্তরীণ নানা পরিস্থিতির কারণে বন্দর দিয়ে কনটেইনার পরিবহনে যতটা প্রবৃদ্ধি হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা না বাড়ায় বৈশ্বিক তালিকায় অবস্থানও আগের বছরের তুলনায় অপরিবর্তিত রয়েছে।’
লয়েডস লিস্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে ৩০ লাখ ৫০ হাজার ৭৯৩ একক কনটেইনার ওঠানামা করেছে। এর আগে ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ৩১ লাখ ৪২ হাজার ৫০৪। এ হিসাবে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে কনটেইনার ওঠানামা কমেছে ২ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে কনটেইনার ওঠানামা কমলেও বৈশ্বিক তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি।
চট্টগ্রাম বন্দর ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে ২৮ ধাপ এগিয়েছিল। ২০১৪ সালে এ বন্দরের অবস্থান ছিল ৮৬তম, ২০১৫ সালে ৮৭তম, ২০১৬ সালে ৭৬তম, ২০১৭ সালে ৭১তম, ২০১৮ সালে ৭০তম, ২০১৯ সালে ৬৪তম, ২০২০ সালে ছিল ৫৮তম। তবে ২০২১ সালের তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দর পিছিয়ে ৬৭তম অবস্থানে নেমে যায়। পরের বছরের তালিকায় আবারো তিন ধাপ এগিয়ে ৬৪তম স্থানে জায়গা করে নেয়। তবে গত বছর আবারো তিন ধাপ নেমে ৬৭তম অবস্থানে চলে যায়, যা এ বছর প্রকাশিত তালিকায়ও অপরিবর্তিত রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপরে তথ্য অনুযায়ী, এ বন্দর দিয়ে যত পণ্য পরিবহন করা হয়, তার ২৭ শতাংশ কনটেইনারে আনা-নেয়া করা হয়। বাকি ৭৩ শতাংশ পণ্য কনটেইনারবিহীন সাধারণ জাহাজে পরিবহন করা হয়। এসব জাহাজের (বাল্ক, ব্রেক বাল্ক ও ট্যাংকার) খোলে আমদানি করা হয় মূলত সিমেন্ট, ইস্পাত ও সিরামিক কারখানার কাঁচামাল এবং পাথর, কয়লা, ভোগ্যপণ্য ও জ্বালানি তেল। তবে পরিমাণে এক-চতুর্থাংশ পণ্য পরিবহন হলেও কনটেইনারে বেশির ভাগ শিল্পের কাঁচামাল, বাণিজ্যিক পণ্য ও ভোগ্যপণ্য আমদানি করা হয়। ●
অকা/বাণিজ্য/ফর/রাত/১৯ আগস্ট, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 1 year আগে

