অর্থকাগজ প্রতিবেদন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান ১৩ জুন সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মিঠা পানির মাছ আহরণে চীনকে টপকে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান জানান, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার ২০২৪ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী মিঠা পানির মাছ আহরণে বাংলাদেশ চীনকে টপকে বিশ্বে ২য় অবস্থানে উঠে এসেছে, বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে ৫ম স্থানের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে, ক্রাস্টাশিয়ান্স উৎপাদনে বিশ্বে ৮ম এবং সামুদ্রিক মাছ উৎপাদনে ১৪তম স্থান অধিকার করেছে।

মন্ত্রী বলেন, দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার ২০২২-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী চীনের মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ছিল ১.৪৬ মিলিয়ন টন এবং অবস্থান ছিল বিশ্বে ২য়। অপরদিকে বাংলাদেশের উৎপাদন ছিল ১.২৫ মিলিয়ন টন এবং অবস্থান ছিল বিশ্বে ৩য়। বিগত দুই বছরে বাংলাদেশের মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ১.২৫ মিলিয়ন টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১.৩২ মিলিয়ন টনে উন্নীত হয়েছে। যা বর্তমান সরকারের একটি অভাবনীয় সাফল্য।

মন্ত্রী বলেন বর্তমান সরকারের সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনায় মৎস্য খাতে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর সফল বাস্তবায়নের ফলে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে মৎস্য উৎপাদন হয়েছে ৪৯.১৫ লাখ মেট্রিক টন।

মৎস্য ও প্রানিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ল্যমাত্রা অর্জন ও টেকসই মৎস্য উৎপাদন নিশ্চিতকল্পে সেক্টরাল অ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়নপূর্বক তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়াও সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ল্েয মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক ‘সাসটেইনেবল কোষ্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ’ শীর্ষক একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে যা সুনীল অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা সংযোজনের পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে মন্ত্রী জানান।

তিনি বলেন, আমরা ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম। ইলিশ জাতীয় জীবনের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। এসব প্রধানমন্ত্রীর বিচণ নেতৃত্বের ফসল। আগামী দিনেও যেন এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারি সে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এ বছর কোরবানির পশুর চাহিদা ১ কোটি ৭ লাখ, সেখানে প্রস্তুত আছে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ। ফলে চাহিদার চেয়ে জোগান বেশি আছে। চাহিদার চেয়ে জোগান বেশি থাকলে গরুর দাম এত বেশি কেন এ প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, বাজারে কারসাজি করে দাম বৃদ্ধি করলে বাজার নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে দাম নির্ধারণের দায়িত্ব আমাদের না। এটি চাহিদা ও সরবরাহের উপর নির্ভর করে। সরবরাহ বাড়ানোর দায়িত্ব আমাদের এবং আমরা সেটি করেছি।

মাছ চাষে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হচ্ছে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এটি একটি চ্যালেঞ্জ। তবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মন্ত্রণালয় তৎপর রয়েছে। তিনি বলেন, মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য দেশীয় প্রজাতির মাছের জাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে, অভয়াশ্রম করা হচ্ছে। উন্মুক্ত জলাশয়ে পোনা অবমুক্ত করা হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, কারেন্ট জাল গোটা বাংলাদেশকে ছেয়ে ফেলেছে। কারেন্ট জাল দিয়ে মাছের রেণু, পোনা পর্যন্ত ধরে ফেলা হচ্ছে। কারেন্ট জাল আমরা দেশে নিষিদ্ধ করেছিলাম। কিন্তু উৎপাদনকারীরা কোর্টে রিট করেছে। আমরা এ ব্যাপারে পদপে নিচ্ছি। মাছ রফতানির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এরই মধ্যে আমরা মাছ রফতানি করছি। তবে ভবিষ্যতে রফতানি আয় বৃদ্ধির জন্য আরো নিরাপদভাবে মাছ প্রসেসিং করার পদপে নেয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল কাইয়ূম, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. আলমগীর উপস্থিত ছিলেন। ●

অকা/মখা/ফর/সন্ধ্যা/১৩ জুন, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

সর্বশেষ হালনাগাদ 1 year আগে

Leave A Reply

Exit mobile version