অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ২৩ জুন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, বর্তমানে বিশ্বের ২১০টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক লেনদেন থাকলেও ৮২টি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে চীনের সঙ্গে।
২০২২-২৩ অর্থ বছরের হিসাব অনুযায়ী দেশের মোট বাণিজ্য ঘাটতি ১৫ হাজার ২৩৯ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার মধ্যে চীনের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি ১৭ হাজার ১৪৯ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলংকা ও মালদ্বীপ ছাড়া অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে ২০১১-১২ অর্থ বছরে রফতানির পরিমাণ ছিল ৬৭০ দশমিক ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এ ঘাটতি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৩৬২ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। একই সময়ে সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে আমদানি ৫ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১০ হাজার ১০৩ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
সংরতি নারী আসনের সদস্য শাম্মী আহমেদের প্রশ্নের উত্তরে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৭ হাজার ১৬০ দশমিক ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে তামাক ও মদ জাতীয় পণ্য ছাড়া সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ায় দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি লাঘব হচ্ছে এবং ভারতের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রতিবেশী দেশটিতে বাংলাদেশের পণ্য রফতানির পরিমাণ প্রথমবারের মতো দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।’
সংসদে প্রতিমন্ত্রী আরো জানান, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে মে মাস পর্যন্ত পণ্য খাতে রফতানি আয়ের পরিমাণ ৫১ হাজার ৫৪২ দশমিক ৭০ মিলিয়ন ডলার। এ সময়ে সেবা খাতে রফতানি আয়ের পরিমাণ ৫ হাজার ৮৩ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন ডলার।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, গত এক যুগের মধ্যে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে দেশে সবচেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি হয়েছে, যা ৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। এছাড়া ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ অর্থ বছরে ৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ, ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ছিল।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৪৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক বিদেশে রফতানি হয়েছে। এেেত্র প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১০.২৭ শতাংশ। চলতি অর্থ বছরে (২০২৩-২৪) জুলাই-মে সময়ে তৈরি পোশাক খাত হতে রফতানি আয় হয়েছে ৪৩.৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কভিড-১৯-এর প্রভাব, বৈশ্বিক মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এবং বাংলাদেশের প্রধান রফতানি বাজার আমেরিকা ও ইউরোপে মূল্যস্ফীতি প্রভৃতি কারণে রফতানি আয় অর্জনে শ্লথগতি পরিলতি হচ্ছে। বিশ্ব বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে পণ্যের চাহিদার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে বাংলাদেশে সরবরাহকারী হিসেবে রফতানি খাতে বিশ্ব বাজারের চাহিদা পূরণে পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাকের চাহিদা বিশ্ব বাজারে কমে যাওয়ার কারণে রফতানি প্রবৃদ্ধির হার কমে গেছে। তবে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, স্পেন, কানাডা, জাপান প্রভৃতি দেশে এ খাত থেকে রফতানি আয় অর্জনে প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। ●
অকা/শিখা/ফর/সন্ধ্যা/২৪ জুন, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 1 year আগে

