অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
রেকর্ড পরিমাণ ডলার রেমিট্যান্স প্রবাসীরা জুনে দেশে পাঠিয়েছেন। বিদ্যমান বিনিময় হার অনুসারে তা প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩ সালের একই মাসে ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। সে হিসাবে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের শেষ মাসে রেমিট্যান্সে ১৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আর পুরো অর্থ বছরের প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সদ্য শেষ হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের শুরুর দিকে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় বিপর্যয় হয়েছিল। বিশেষ করে আগস্টে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৬০ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরে সেই প্রবাহ ১৩৩ কোটি ডলারে নেমে যায়। মূলত ডলারের বিনিময় হার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর হওয়ায় রেমিট্যান্সে বড় পতন হয়। পরে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক উদার হলে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ফিরে আসে। সব মিলিয়ে গত অর্থ বছরে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২ হাজার ৩৯১ কোটি বা ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থ বছরে ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছিল। সে হিসাবে সদ্য গত হওয়া অর্থ বছরে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এক্ষেত্রে রেমিট্যান্সের পরিমাণ বেড়েছে ২৩০ কোটি ৩৮ লাখ ডলার।
তবে গত অর্থ বছরে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ছাড়া দেশের প্রধান সব শ্রমবাজার থেকেই আশঙ্কাজনক হারে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। বিশেষ করে সৌদি আরব থেকে তা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। অথচ গত তিন বছরে সৌদিসহ প্রধান শ্রমবাজারগুলোয় রেকর্ডসংখ্যক বাংলাদেশী শ্রমিক অভিবাসী হয়েছেন।
বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে জীবিকার সন্ধানে অভিবাসী হয়েছেন রেকর্ড ১৩ লাখ ৫ হাজার ৪৫৩ বাংলাদেশী। এর আগে ২০২২ সালে অভিবাসী বাংলাদেশীর সংখ্যা ছিল ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৩ জন। অর্থাৎ গত দুই বছরে ২৪ লাখের বেশি বাংলাদেশী কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশ গেলেও সে অনুপাতে রেমিট্যান্স বাড়েনি। চলতি বছরেও একই হারে শ্রমিকরা অভিবাসী হচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এযাবতকালে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে ২০২০-২১ অর্থ বছরে। ওই অর্থ বছরে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ ছিল ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। এরপর পরের অর্থবছর তথা ২০২১-২২-এ রেমিট্যান্স ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে যায়। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে রেমিট্যান্স ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেড়ে ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘অর্থ বছরের শুরুর দিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা শ্লথ থাকলেও শেষ দিকে এসে বেশ ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক প্রভাব অর্থনীতির সূচকগুলোয় পড়েছে। দেশে ডলারের পরিস্থিতিও পুরোপুরি স্বাভাবিক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে। আশা করছি, নতুন অর্থ বছরে রিজার্ভ বৃদ্ধিসহ বৈদেশিক বাণিজ্যের অন্য সূচকগুলোরও দৃশ্যমান উন্নতি হবে। ●
অকা/আখা/ফর/সকাল/২ জুলাই, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 1 year আগে

