অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
জনসংখ্যার বৃহৎ অংশ সরাসরি কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল হলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাজারের অস্থিতিশীলতা কৃষকদের জন্য এক অব্যাহত ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। এই ঝুঁকির বোঝা বহন করতে গিয়ে কৃষকের জীবন-জীবিকা বারবার অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। এমন প্রোপটে কৃষি বীমা হতে পারে একটি কার্যকর সমাধান।
বিশ্বের বহু দেশে কৃষি বীমাকে একটি অপরিহার্য আর্থিক সেবা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। যেমন, জাপানে শস্য বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। চীনে প্রাণিসম্পদের মহামারীজনিত তির জন্য বীমা ব্যবস্থা রয়েছে। এই ধরনের উদ্যোগ কৃষকদের আর্থিক সুরা নিশ্চিত করতে সহায়ক।
এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে কৃষি বীমা কার্যক্রম রয়েছে। এই বীমা ব্যবস্থা কৃষকদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে এবং কৃষি খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। বাংলাদেশেও কিছু পরীামূলক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেখানে ফসল ও প্রাণিসম্পদ বীমার সম্ভাবনা যাচাই করা হয়েছে। তবে এগুলোর বিস্তৃত গ্রহণযোগ্যতা এখনও গড়ে ওঠেনি।
কৃষি বীমা সম্প্রসারণের পথে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান। কৃষকের মধ্যে সচেতনতার অভাব, প্রিমিয়ামের উচ্চতা, তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা এবং আস্থার সংকট এ খাতকে সীমিত পর্যায়ে আটকে রেখেছে। অনেক সময় বীমা কাঠামো বাস্তব তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় কৃষকরা প্রত্যাশিত সুবিধা পান না।
তবুও এই খাতের সম্ভাবনা অস্বীকার করার উপায় নেই। সঠিক নীতিগত সহায়তা, সরকারি ভর্তুকি, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং কার্যকর নজরদারি ব্যবস্থা থাকলে কৃষি বীমা কৃষকের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। এতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত কমিয়ে উৎপাদনকে স্থায়িত্ব দেওয়া সম্ভব হবে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কৃষি বীমা কেবল একটি আর্থিক প্রক্রিয়া নয়, বরং কৃষকের জন্য একটি সুরার জাল। এটি গ্রামীণ অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করে, কৃষি বিনিয়োগে আস্থা তৈরি করে এবং খাদ্য নিরাপত্তাকে দীর্ঘমেয়াদে সুসংহত করে। ●
অকা/আখা/ফর/সন্ধ্যা/২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 1 week আগে