অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম রাশিয়াকে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক জোনসহ গভীর সমুদ্রবন্দর ও অন্যান্য স্থাপনা তৈরি হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ৫৫ বিলিয়ন ডলারের রফতানি করছে। দেশ এখন ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতি হওয়ার পথে। যার ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালের মধ্যে ৩০০ বিলিয়ন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরো জোরদার করতে আগ্রহী বাংলাদেশ।’
২৭ মে রাশিয়ান ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। এফবিসিসিআইয়ের গুলশান কার্যালয়ে ‘রাউন্ড টেবিল অন ডেভেলপমেন্ট অব ট্রেড অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন বাংলাদেশ-রাশিয়া’ শীর্ষক এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ‘তৈরি পোশাকের পাশাপাশি ওষুধ, হালকা প্রকৌশল পণ্য, প্লাস্টিক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং অন্যান্য অনেক খাতে দুই দেশের ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের উদীয়মান অর্থনীতি এবং সুলভ জনশক্তির সঙ্গে রাশিয়ার আধুনিক প্রযুক্তি দুই দেশের সহযোগিতা জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’
২০১২-১৩ অর্থ বছরে বাংলাদেশ রাশিয়ায় শূন্য দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রফতানি করেছিল। এক দশকের ব্যবধানে ২০২৩ সালে তা দ্বিগুণ হয়ে শূন্য দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। বিপরীতে রাশিয়া থেকে আমদানি হয়েছে শূন্য দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। রাশিয়ায় বাংলাদেশের রফতানি এখনো অর্ধবিলিয়ন ডলারে না পৌঁছালেও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সহজ করতে বাংলাদেশে রাশিয়ার ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করতে হয় বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের। এতে ব্যবসায়িক জটিলতা ও খরচ দুটোই বেড়ে যায়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় উভয় দেশই। দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ব্যাংকিং সুবিধা চালু হলে এ জটিলতা অনেকটাই কমে যাবে এবং উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য সুবিধাও বাড়বে।’
বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে এখন রফতানির জন্য প্রস্তুত দাবি করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানিকারক। বিশ্বের শীর্ষ ১০টি সবুজ পোশাক কারখানার মধ্যে শীর্ষ আটটি কারখানাই বাংলাদেশে অবস্থিত। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি এখন জনপ্রিয় হচ্ছে। এর বাইরেও ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক, হিমায়িত সামুদ্রিক খাবার, সিরামিক, পাটপণ্য, ভোগ্যপণ্য এবং গৃহস্থালি সামগ্রীর রফতানিকারক হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছে বাংলাদেশ।’
রাশিয়ান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ভারতে নিযুক্ত রাশিয়ার ট্রেড কমিশনার ড. আলেকজান্ডার রাইবাস ও বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি. ম্যান্টিটস্কি। এ সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে রাশিয়ার সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সহসভাপতি মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, শমী কায়সার প্রমুখ। ●
অকা/শিবা/ফর/সকাল/২৮ মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 2 years আগে
