অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ব্যবহৃত জেনেরিক ওষুধও বিশ্ব বাজারে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে বাংলাদেশের ওষুধ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য থেকে জানা গেছে, বিদায়ি অর্থ বছরে (২০২০-২১) ওষুধ পণ্য রফতানি করে আগের বছরের তৃলনায় প্রবৃদ্ধি হয় প্রায় ২৫ শতাংশ। এ সময় আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে রফতানি হয় এক কোটি ৩৬ লাখ ডলার মূল্যের ওষুধ।
ওষুধ খাত সংশ্লিষ্টরা বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ রেমডেসিভির ও ফ্যাভিপিরাভির-এর রফতানি চাহিদা বাড়ায় ২০২০-২১ অর্থব ছরে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। এ খাতটিতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগও বাড়ছে।
বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে এই খাতে বিদেশিদের আগ্রহ বেড়েছে। এ সময় তিন হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ নিবন্ধিত হয়েছে। এ ছাড়া ওষুধ প্রশাসন পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে উন্নীত করা, সরকারি পর্যায়ে ওষুধের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা। ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিকে আধুনিকায়ন করে ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি করা এবং ওষুধের কাঁচামালের উপকরণ তৈরির জন্য অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস (এপিআই) পার্ক স্থাপনসহ সরকারের বিভিন্ন নীতি সহায়তা ওষুধের বাজার বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আমেরিকা-ইউরোপের বহু দেশে বাংলাদেশের ওষুধের বিপুল চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর কোভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট ওষুধের চাহিদা বেশি আসতে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় দেশের আটটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত কয়েকটি ওষুধের রফতানি বেড়ে যায়। এখন পর্যন্ত ৪০টি দেশে গেছে কোভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট ওষুধ। এর মধ্যে রয়েছে পাশের দেশ ভারত, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, আরব আমিরাত, সৌদি আরব, তুরস্ক, চিলি, ব্রাজিল, মেক্সিকো, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, পূর্ব তিমুর, যুক্তরাজ্যসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশ।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একজস কর্মকর্তা জানান, দেশে বেক্সিমকো, স্কয়ার, ইনসেপ্টা, রেনাটা, এসিআই, এসকেএফ, হেলথকেয়ার, পপুলার, বীকন, একমি, এরিস্টো ফার্মাসহ বেশ কিছু প্রতষ্ঠানের ওষুধ গত বছরের তুলনায় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি রফতানি হয়েছে করোনাকালে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গেছে বেক্সিমকো, ইনসেপ্টা, রেনাটা, বীকন ও স্কয়ারের ওষুধ।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের (বিএপিআই) তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় উৎপাদনকারীরা ১৪৪টি দেশে ওষুধ রফতানি করেন এবং স্থানীয় চাহিদার ৯৭ শতাংশ মেটান। এ ছাড়া দেশের ওষুধ এখন উন্নত বিশ্বের অনেক দেশে রফতানি হচ্ছে। বেশ কয়েকটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান উন্নত দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস বা জিএমপি সনদ লাভ করেছে। স্বীকৃতিদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলো হলো -যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ, যুক্তরাজ্যের এমএইচআরএ, ইউরোপের ইইউ, অস্ট্রেলিয়ার টিজিএ ইত্যাদি। তবে এখনো দেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) অনুমোদিত সরকারি মান যাচাইকারী কোনো ল্যাবরেটরি নেই।
#
সর্বশেষ হালনাগাদ 4 years আগে
