অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
দেশের পুঁজি বাজারের ১৫ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর চার কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো শেয়ার বাজারে লেনদেন বন্ধ থাকায় গড় লেনদেনে টাকার অঙ্কে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে; যে কারণে সূচক বাড়লেও টাকার অঙ্কে লেনদেন কমেছে। তবে লেনদেন কমলেও বাজার মূলধন বেড়েছে দুই হাজার কোটি টাক। মূলত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারের সবসূচকের উন্নতির কারণে আগের সপ্তাহের চেয়ে এর ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পাশাপাশি টাকার অঙ্কে লেনদেন বেড়েছে।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮.৭৫ পয়েন্ট বা ০.১৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭৩৫.২৭ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১২.১৩ পয়েন্ট বা ০.৯৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৫৭.৮ পয়েন্টে। ডিএসই-৩০ সূচক ৫.৬৯ পয়েন্ট বা ০.২৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১০৬.৪৪ পয়েন্টে। এ ছাড়া ডিএসএমইএক্স সূচক ৪১.৫৬ পয়েন্ট বা ৩.৫৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২১৪.৭৪ পয়েন্টে।
লেনদেন হওয়া ৬৯ কোটি ৮ লাখ ৯০ হাজার শেয়ারের বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪৫২ কোটি ৩৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল তিন হাজার ২২১ কোটি ৪৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার; অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৭৬৯ কোটি ১০ লাখ ৯০ হাজার টাকা বা ২৩.৮৭ শতাংশ।
গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ছয় লাখ ৯৩ হাজার ৩২৯ কোটি তিন লাখ ৮০ হাজার টাকা।
আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৯৫ হাজার ৫৭১ কোটি ৬২ লাখ টাকায়; অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে দুই হাজার ২৪২ কোটি ৫৮ লাখ ২০ হাজার টাকা বা ০.৩২ শতাংশ।
গত সপ্তাহের ডিএসইতে মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় ছিল যথাক্রমেÑ রেনউইক, সোনালি পেপার, এসকে টিমস, ওরিয়ন ইনফিউশন, সোনালি আঁশ, খান ওভেন ব্যাগ, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এমারাল্ড অয়েল, বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক বন্ড এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্ট। এবং দর হারিয়েছে যথাক্রমেÑ হামি ইন্ডাস্ট্রিজ, কনফিডেন্স সিমেন্ট, ট্রাস্ট ব্যাংক মিউ. ফান্ড, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, শ্যামপুর সুগার, প্রিমিয়ার লিজিং, তৌফিকা ফুডস, উত্তরা ফিন্যান্স, জিপিএইচ ই¯পাত এবং সাউথ বাংলা।
গত সপ্তাহে লেনদেন বেশি হওয়া কোম্পানির মধ্যে ছিল যথাক্রমে- সোনালি আঁশ, লিনডে বাংলাদেশ, গ্রামীণফোন, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ওরিয়ন ইনফিউশন, ব্র্যাক ব্যাংক, সোনালি পেপার, এনআরবি ব্যাংক।
দেশের অপর পুঁজি বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫১.৮৭ পয়েন্ট বা ০.৩২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ১৯১.৮৯ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচক সিএসসিএক্স ৩০.৮৯ পয়েন্ট বা ০.৩১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৭৬০.৪৩ পয়েন্টে। অপর দু’টি সূচকের মধ্যে সিএসই-৫০ সূচক ৫.৮৬ পয়েন্ট বা ০.৪৯ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক ৯.২৭ পয়েন্ট বা ০.৯০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমেÑ এক হাজার ২০০.৪১ পয়েন্টে এবং এক হাজার ৩৯.৯৩ পয়েন্টে। এ ছাড়া সিএসই-৩০ সূচক ২৮.৫০ পয়েন্ট বা ০.২১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৯৮৪.১৬ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩২১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪২টি, কমেছে ১৫২টি ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির। সপ্তাহটিতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৪২ কোটি ১৭ লাখ ১০ হাজার ৪৪২ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩৫ কোটি ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭১৯ টাকার অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ছয় কোটি ৬২ লাখ ৪৬ হাজার ৭২৩ টাকা বা ১৮.৬৩ শতাংশ।
ব্লক মার্কেটে ১০ কোম্পানির ১২০ কোটি টাকার লেনদেন : গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ১০ কোম্পানির মোট ১২০ কোটি ৬৫ লাখ ৭০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো- ইসলামী ব্যাংক, বিএটিবিসি, ইস্টার্ন ব্যাংক, ইবনেসিনা, এসবিএসি ব্যাংক, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, বিচ হ্যাচারি, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স ও বেক্সিমকো।
সপ্তাহজুড়ে ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া অন্য ৭টি কোম্পানির মধ্যে- ইবনেসিনার ১৩ কোটি ৭৯ লাখ ২০ হাজার টাকা, এসবিএসি ব্যাংকের ১৩ কোটি ৪৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ন্যাশনাল টি কোম্পানির ১৩ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ১১ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা, বিচ হ্যাচারির ৬ কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ৬ কোটি ৩৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং বেক্সিমকোর ৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
ডিএসইর পিই রেশিও বেড়েছে ০.২৭ শতাংশ : গত সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও (সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত) বেড়েছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় ডিএসইর পিই রেশিও ০.২৭ শতাংশ বা দশমিক ০.০৩ পয়েন্ট বেড়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ১০.৯১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১০.৮৮ পয়েন্ট। খাতভিত্তিক হিসাবে পিই রেশিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যাংক খাতে ৬.৪ পয়েন্ট, সিমেন্ট খাতে ১৩.৮ পয়েন্ট, সিরামিকস খাতে ১১৪.৬ পয়েন্ট, প্রকৌশল খাতে ১৪.৬ পয়েন্ট, আর্থিক খাতে ৩৯.২ পয়েন্ট, খাদ্য খাতে ১৫.৫ পয়েন্ট, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ১০.৩ পয়েন্ট, সাধারণ বীমা খাতে ১৩.৭ পয়েন্ট, আইটি খাতে ১৭.৩ পয়েন্ট, পাট খাতে ১৫.২ পয়েন্ট, বিবিধ খাতে ৩০.৭ পয়েন্ট, মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ১৫২.৬ পয়েন্ট, কাগজ খাতে ৩৬.১ পয়েন্ট, ওষুধ খাতে ১৩.৩ পয়েন্ট, সেবা-আবাসন খাতে ১৫.৭ পয়েন্ট, ট্যানারি খাতে ২২.৭ পয়েন্ট, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ১৩.৮ পয়েন্ট, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ১২.৮ পয়েন্ট ও বস্ত্র খাতে ১৯.২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ●
অকা/পুঁবা/ফর/রাত/২১ সেপ্টেম্বও, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 1 year আগে