অর্থকাগজ প্রতিবেদন
অটোগ্যাসে শুল্কমুক্ত সুবিধা চান অটোগ্যাস স্টেশন মালিকরা। তাদের দাবি, অটোগ্যাস স্টেশনকে আগামী ১০ বছরের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধা এবং এ খাতে ৭ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে, যাতে ভোক্তা পর্যায়ে এলপিজি আরো সাশ্রয়ী মূল্যে সরবরাহ করা যায়।

১৮ মে রাজধানীর একটি ক্লাবে আয়োজিত বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এসব দাবি জানান বাংলাদেশ এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন অ্যান্ড কনভার্সন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ সিরাজুল মাওলা। ‘পরিবেশবান্ধব তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) খাতে দেশীয় শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করা প্রয়োজন। ব্যবসা প্রসারে এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশনকে আগামী ১০ বছরের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করতে হবে। এছাড়া ৭ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে, যাতে ভোক্তা পর্যায়ে এলপিজি আরো সাশ্রয়ী হয়ে ওঠে।’

‘২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় আমাদের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাবগুলো জোরালোভাবে উপস্থাপন করেছি। আশা করছি এনবিআর আমাদের এ যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে এ খাতের উন্নয়নে সহযোগী ভূমিকা রাখবে।’

সভায় এলপি গ্যাস বিতরণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও দেশের ৬৪ জেলা থেকে এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন এবং কনভার্সন ওয়ার্কশপের ৫০০ জনের বেশি মালিক বা প্রতিনিধি অংশ নেন। অনুষ্ঠানে এলপিজি সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। বসুন্ধরা এলপিজির পক্ষ থেকে স্মারকটি গ্রহণ করেন বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. ফয়সাল আলম ভূইয়া।

অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. হাসিন পারভেজ গত বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

বর্তমান কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে সিরাজুল মাওলা বলেন, ‘ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নের জন্য জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা কাজ করছি। বিইআরসি লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন ফি কমানো এবং লাইসেন্সপ্রাপ্তি সহজ করতে কাজ করা হয়েছে। এরই মধ্যে এর সুফল আমরা পাচ্ছি। সরকারি যানবাহন এলপিজিতে কনভার্ট, মোটরসাইকেল এলপিজিতে কনভার্ট, অটোরিকশা রাস্তায় চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ নানা বিষয় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।’

এলপিজি সরবরাহকারী বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধি তাদের বক্তব্যে বলেন, কোনো এলপিজি কোম্পানি তাদের ভোক্তাদের এলপিজি পরিমাণে কম দেয় না। সব কোম্পানিই তাদের ভোক্তাদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক ধরে রাখতে চায়। তাই পরিমাণে কম দেয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।

অনেক স্টেশন মালিক চুক্তিবদ্ধ কোম্পানির বাইরেও এলপিজি নিচ্ছেন। একাধিক কোম্পানির কাছ থেকে গ্যাস নেয়ার কারণে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং বাজারে বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে। তাই এলপিজি কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা স্টেশন মালিকদের চুক্তির বাইরে কোনো কোম্পানির কাছ থেকে এলপিজি না নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

অপারেটরা আরো বলেন, বিইআরসি স্টেশন মালিকদের অটোগ্যাস লিটার প্রতি বিক্রিতে কমিশন ৮ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কমিশনটি ৮ টাকার পরিবর্তে ১০ টাকা করার জন্য বিইআরসিতে প্রস্তাব দেয়ার জন্য পরামর্শ দেন। এ প্রস্তাব বাস্তবায়নে স্টেশন মালিকদের পাশে থাকবে এলপিজি কোম্পানিগুলো।

উল্লেখ্য, এলপিজি অটোগ্যাসকে বিকল্প জ্বালানি হিসেবে সাশ্রয়ী দামে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে এ ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অটোগ্যাস স্টেশন এবং কনভার্সন ওয়ার্কশপের মালিকদের নিয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন অ্যান্ড কনভার্সন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ ২০১৯ সালে যাত্রা করে। বর্তমানে দেশে এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশনের সংখ্যা প্রায় এক হাজার।

অকা/অটোগ্যাসশিবা/ফর/সকাল, ১৯ মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

সর্বশেষ হালনাগাদ 1 year আগে

Leave A Reply

Exit mobile version