অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
মেধাবীদের আকৃষ্ট করা ও দক্ষ কর্মকর্তাদের ধরে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক আবারও চালু করেছে মেধার ভিত্তিতে অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট বা বোনাস সুবিধা। এবার থেকে গ্রেড–৯ ও গ্রেড–১০ পদে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাদের শিক্ষাগত ফলাফল ও প্রশিক্ষণে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ চারটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট পেতে পারবেন।
২১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ–২-এর পরিচালক নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক অভ্যন্তরীণ সার্কুলারে এই নির্দেশনা জারি করা হয়।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, কর্মকর্তারা চাকরিতে যোগদানের মুহূর্ত থেকেই অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্টের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন। তবে এই ইনক্রিমেন্ট চাকরি স্থায়ী হওয়ার পর বকেয়াসহ প্রদান করা হবে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, যারা শিক্ষাজীবনের চারটি ধাপে—এসএসসি, এইচএসসি, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে—চারটি প্রথম শ্রেণি বা বিভাগ অর্জন করেছেন, তারা তিনটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট পাবেন। তিনটি প্রথম শ্রেণি বা বিভাগ থাকলে দেওয়া হবে দুটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট। এই মেধাভিত্তিক ইনক্রিমেন্ট নিয়মিত বার্ষিক ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে যোগ হবে।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে যারা ৮০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর অর্জন করবেন, তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ কর্মকর্তাকে আরও একটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হবে। অর্থাৎ একজন কর্মকর্তা সর্বমোট পাঁচটি ইনক্রিমেন্টের সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নবম ও দশম গ্রেডের কর্মকর্তারা পূর্বেও শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে ইনক্রিমেন্ট পেতেন। তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কয়েকটি ব্যাচের জন্য এই সুবিধা কোনো কারণ ছাড়াই বন্ধ করা হয়। ২০২৪ সালের আগস্টে সরকারের পরিবর্তনের পর বিষয়টি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং একই বছরের ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ৪৩৮তম সভায় তা আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পায়।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, যদি কোনো কর্মকর্তা যোগদানের পরপরই বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ সম্পন্ন না করতে পারেন, তবে পরবর্তীতে প্রশিক্ষণ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে বকেয়াসহ সংশ্লিষ্ট ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, দীর্ঘদিন ধরে ইনক্রিমেন্ট বন্ধ থাকায় তরুণ কর্মকর্তাদের মধ্যে কর্মপ্রেরণার ঘাটতি ও হতাশা দেখা দিয়েছিল। মেধাভিত্তিক ইনক্রিমেন্ট পুনরায় চালুর ফলে কর্মীদের উৎসাহ, মনোবল ও পেশাগত দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি পাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু সুবিধা সংকুচিত হওয়ায় অনেক কর্মকর্তা সুযোগ পেলে অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যাচ্ছিলেন। নতুন নীতিমালার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে—এই পদক্ষেপ মেধাবী জনবল ধরে রাখা ও নতুন প্রতিভা আকৃষ্ট করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে, যা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক দক্ষতা ও পেশাগত মানোন্নয়নেও সহায়ক হবে।
উল্লেখযোগ্য যে, ২০২৪ সালের ২৩ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছিল—বিসিএসসহ বিভিন্ন সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে গিয়ে মোট ৫৭ জন কর্মকর্তা প্রতিষ্ঠানটি ছেড়েছেন। তাদের মধ্যে একজন উপপরিচালক, একজন অফিসার এবং বাকিরা সহকারী পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন। ●
অকা/ব্যাংখা/ই/সকাল/২২ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 17 hours আগে