অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
অবৈধ নিয়োগের কারণে ২১ মে বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করে দেয় মালদ্বীপ। সেই ঘোষণার তিন মাস পেরোতেই নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। চলতি মাসেই আসতে পারে বাংলাদেশ থেকে নতুন কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে ২ সেপ্টেম্বর দেশটির ৩০তম সংসদ অধিবেশনে, কর্মসংস্থান আইনের ২ এর অষ্টম সংশোধনীর অনুমোদন দিয়েছে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ডক্টর মোহাম্মদ মুইজ্জ। এই তথ্য নিশ্চিত করেন মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশ মিশনের (শ্রম) কাউন্সেলর মো: সোহেল পারভেজ।
দক্ষিণ এশিয়া তো বটেই, বিশ্বের অন্যতম পর্যটনের দেশ মালদ্বীপ। ভারত মহাসাগর বেষ্টিত অপরূপ সুন্দর এই দেশটিতে, বাংলাদেশী কর্মীদের দক্ষতা ও চাহিদা রয়েছে বহুগুণে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের পদ্ধতি যেন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, দেশটির সরকারের নির্ধারিত এক লক্ষ্য কোটাপদ্ধতি। সে অনুযায়ী আগেই বাংলাদেশ পূর্ণ করে।
তবে দেশটির রাষ্ট্রপতির কর্মসংস্থান আইনের অষ্টম সংশোধনীর অনুমোদনের পর গঠন করা হয় নতুন মন্ত্রিসভা কমিটি। এর অধীনে ন্যস্ত থাকবে দেশটির নিয়োগকর্তাদের যাবতীয় কার্যক্রম। যদি কোনো নিয়োগকর্তা অভিবাসীদের সাথে আইন অমান্য করে, সর্বনিম্ন পঞ্চাশ হাজার রুপিয়া জরিমানাসহ নতুন কর্মী নিয়োগ স্থগিতের মতো বিধান রাখা হয়েছে।
আইনে বলা হয় নতুন করে কোনো দেশ থেকে কর্মী নিয়োগ দিতে হলে নিয়োগকর্তার অধীনে কতজন অভিবাসী কাজ করে এবং তার কোন কোন কর্ম সাইডে কতজন কর্মী লাগবে, কাজের ক্ষেত্র এবং অন্যান্য বিবরণ উল্লেখ করে নতুন মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে জমা দিতে হবে।
এছাড়াও এ আইনের মধ্যে রয়েছে, কাজের সাইটগুলো নিবন্ধন করা, যেখানে একজন প্রবাসী কাজ করবে। অন্যান্য যাবতীয় প্রয়োজনীয় অনুমোদিত ডকুমেন্টস। প্রবাসী কর্মী আনার জন্য কোটার আবেদন করা। নিয়োগ হওয়া অভিবাসীর ওয়ার্ক পারমিট প্রাপ্তি। এ সংশোধনীটি বিশদ ব্যবস্থায় চলবে যার মাধ্যমে কোনো নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে দ্রুতই। যারা প্রবাসী কর্মীদের মালদ্বীপে নিয়ে এসে তাদের ন্যায্যতা রক্ষায় অবহেলা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
বাংলাদেশ মিশনের শ্রম কাউন্সেলর মো: সোহেল পারভেজ এ বিষয়ে বলেন, মালদ্বীপে অভিবাসী কর্মীদের ন্যায্যতা রক্ষায় অবহেলা করলে, নিয়োগকর্তাদের পঞ্চাশ হাজার রুফিয়া জরিমানার বিধান রেখে, পূর্বের কোটাপদ্ধতির পরিবর্তে নতুন নিয়মে বৈধ উপায়ে কর্মী নেবে দেশটি। বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে বর্তমান সংসদে পাস হওয়া প্রণীত আইনে নবগঠিত মন্ত্রিসভা কমিটি। তারা শিগগিরই বাংলাদেশ থেকে নতুন কর্মী নিয়োগের বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে কাজের ভিসায় আসতে ইচ্ছুকদের দুই দেশের সরকারি নির্দেশনা মেনেই আসার পরামর্শ দেন তিনি।
দেশটির রাষ্ট্রপতি এই আইন অনুমোদন করার সাথে সাথে, প্রণীত প্রবিধানের সংশোধনীয় খসড়া তৈরির তারিখ থেকে, আগামী তিন মাসের মধ্যে সরকারি গেজেট প্রকাশ করে নতুন কর্মী নিয়োগের কথা বলা হয়েছে।
নতুন করে কর্মী আসার ক্ষেত্রে মালদ্বীপের কোম্পানিগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে শুনে, কাজ এবং থাকার জায়গা নিশ্চিত করেই বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে কর্মী পাঠানোর জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আহবান জানান দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
উল্লেখ্য, মালদ্বীপের আইন অনুযায়ী, কোনো দেশের সর্বোচ্চ এক লাখ শ্রমিক দেশটিতে কাজ করতে পারবে। দেশটিতে বর্তমানে প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশী কর্মী কর্মরত আছেন। এর মধ্যে অনেকেই আছেন এখনো অবৈধভাবে। ●
অকা/শ্রবা/ফর/সকাল/১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 1 year আগে

