অর্থকাগজ ডেস্ক ●
ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কে গতকাল রীতিমতো রক্তাক্ত হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজার। এশিয়ার দেশগুলো থেকে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র সবখানেই এই রক্তপাত হয়েছে। তবে সেই ধাক্কা কাটিয়ে আজ সকালে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
৮ এপ্রিল ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পতন হয়েছিল ভারতের শেয়ার সূচক সেনসেক্স ও নিফটির। সেই দুই সূচক ৯ এপ্রিল বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আজ সকালে সেনসেক্স বেড়েছে ১ হাজার ২০৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ; নিফটি বেড়েছে ৩৬৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। গতকাল সেনসেক্সের পতন হয়েছিল ৩ দশমিক ২ শতাংশ এবং নিফটির পতন হয়েছিল ৩ শতাংশ।
এদিকে ৯ এপ্রিল সকালে এশিয়ার অন্যান্য দেশের শেয়ার সূচকও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে ইউএস স্টক ফিউচার্সের অবস্থানও ঊর্ধ্বমুখী। এক দিন বড় ধরনের দরপতন হলে পরদিন শেয়ারবাজার সাধারণত ঘুরে দাঁড়ায়। সেই সঙ্গে ওয়াশিংটনও শুল্কের বিষয়ে আপস-রফা করতে চায় এমন ধারণা বাজারে ছড়িয়ে পড়ার কারণে ৯ এপ্রিল বাজারে কিছুটা ইতিবাচক ধারা দেখা যাচ্ছে।
শেয়ার বাজারের পাশাপাশি অন্যান্য বাজারেও ঘুরে দাঁড়ানোর লণ দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বন্ডের সুদহার ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছিল; সেখান থেকে তার উত্থান অব্যাহত আছে। সোনার দামও বেড়েছে ৯ এপ্রিল। আউন্সপ্রতি সোনার দাম বেড়েছে ২৯ দশমিক ৪৫ ডলার বা শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ। বন্ধ হয়েছে তেলের দর হ্রাস। আজ ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে ৬৫ দশমিক শূন্য ৯ ডলারে উঠেছে।
বিষয়টি হলো, অনিশ্চয়তার মধ্যে সাধারণত সোনার দাম বাড়ে; কিন্তু এবার দেখা গেল, বাজারের সেই চিরাচরিত নিয়মও ভেঙে পড়েছে। বুধবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর সাময়িকভাবে সোনার দাম বাড়লেও তারপর দ্রুতগতিতে কমতে থাকে সোনার দাম। এরপর আজ আবার বাড়ল সোনার দাম।
৯ এপ্রিল এশিয়ার শেয়ার সূচকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে জাপানের নিক্কিই এশিয়া সূচক। ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে এই সূচক। জাপান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার পথে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রির টোকিওর সঙ্গে এই আলোচনায় এই নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
অন্যদিকে হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচকের উত্থান হয়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। চীনের মূল ভূখণ্ডের ব্লি চিপস সূচকের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। দণি কোরিয়ার কোসপি সূচক ১ দশমিক ৩ শতাংশ ও অস্ট্রেলিয়ার ইক্যুইটির মানদণ্ড এএক্সজেওর উত্থান হয়েছে ১ শতাংশ। তাইওয়ানের মূল সূচক টিডব্লিউআইআইয়ের গতকাল পতন হয়েছিল ১০ শতাংশ। আজও এই সূচকের পতন হয়েছে ৩ শতাংশ।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের শেয়ার সূচকের মতো ৮ এপ্রিল সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে প্রায় দুই হাজার পয়েন্ট পড়ে যায় মার্কিন বাজারের সূচক। ফলে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সেদিন লেনদেন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজে শুরু হয় চরম অস্থিরতা। প্রথমেই ১ হাজার ৭০০ পয়েন্ট নেমে যায় এই সূচক। কিন্তু কিছুণের মধ্যে ৮০০ পয়েন্ট লাফিয়ে ওঠে সেটি। এর পর আবার ৪১৪ পয়েন্ট নেমে যায় ওই শেয়ারের লেখচিত্র।
১৯৮৭ সালের ১৯ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারের ইতিহাসে ‘কালো সোমবার’ (ব্ল্যাক মানডে) হিসেবে পরিচিত। সেদিন ২২ দশমিক ৬ শতাংশ পড়ে যায় ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ। ৩৮ বছর পর ওয়াল স্ট্রিটে সে রকম রক্তপাত হলো ৮ এপ্রিল। ●
অকা/পূঁবা/ফর/রাত/৮ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 7 months আগে

