অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
আবাসনের স্বপ্নপূরণে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী! স্বপ্নপূরণ হচ্ছে ঢাকার বস্তিবাসীদের। মহানগরে বসবাসরত বস্তিবাসীরাও থাকবেন আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ বহুতল ভবনের নতুন ফ্ল্যাটে।
২০১৭ সালে জীবনের মৌলিক চাহিদা গৃহায়ণের এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। ওই বছরের ২৬ অক্টোবর এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
সরকারি উদ্যোগে বস্তিবাসীদের জন্য নির্মিত এসব ফ্ল্যাটে আধুনিক সব সুবিধা রাখা হয়েছে। তবে বিনামূল্যে নয়, মাত্র সাড়ে ৪ হাজার টাকা ভাড়ায় এখানে থাকবেন নগর জীবনের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত বস্তির মানুষেরা।
আজ (৩ আগস্ট) মিরপুর-১১ নম্বর সেকশনে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ নির্মিত বস্তিবাসীদের জন্য ৩০০ ফ্ল্যাটের বরাদ্দপত্র হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১১ নম্বর সেকশনে বস্তিবাসীদের জন্য সর্বমোট ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে মোট ১৪৮ কোটি টাকা। মঙ্গলবার ৩০০ পরিবারের হাতে বরাদ্দপত্র দেওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হবে আরও ১০০১টি পরিবারকে। ওই বস্তিতে থাকা ১০ হাজার পরিবার নতুন ফ্ল্যাটে থাকার সুযোগ পাবেন।
এই বস্তির পরিবারগুলো আগে ফ্ল্যাটে বসবাস করার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
জাতীয় গৃহায়ন অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী জোয়ারদার তাবেদুন নবী জানান, ‘২০১৭ সালের ২৬ অক্টোবর প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনে ৫টি ভবনের ৩টি আজ (মঙ্গলবার) উদ্বোধন হচ্ছে। বাকি দুটি পরে উদ্বোধন করা হবে। ৫টি ভবনে ৫৩৩টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখান থেকে মঙ্গলবার ৩০০টি হস্তান্তর করা হবে। পরে প্রকল্পে ১ হাজার ১টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। এরকম ধাপে ধাপে ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘এখন যেখানে ৫টি ভবন করা হচ্ছে, সেখান থেকে যাদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল, তাদেরই বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বস্তিবাসীর মাঝে সার্ভে করে দেখা হয়েছে তারা দুই রুমের টিনশেড বাসা কত টাকা ভাড়া দিয়ে থাকেন। সার্ভের তথ্যানুযায়ী মন্ত্রণালয় থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ভাড়া প্রতিদিন, সাপ্তাহিক ও মাসেও দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। ইচ্ছা করলে একবারেও সাড়ে চার হাজার টাকা দিতে পারবে।’
তিনি জানান, ১৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প নির্মাণ করা হচ্ছে। একেকটি ফ্ল্যাটের মাপ হচ্ছে ৬৭৩ বর্গফুট।
আজ বস্তিবাসীদের হাতে বরাদ্দপত্র দেওয়া ছাড়াও উদ্বোধন করা হবে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ২৪৭৪টি ফ্ল্যাট এবং মাদারীপুর সমন্বিত অফিস ভবন।
জানা গেছে, ছয় বিঘা জমির ওপর ১৪৯ কোটি ব্যয়ে ১৪ তলার পাঁচটি ভবন নির্মাণ করা হয়। দুই কক্ষবিশিষ্ট প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন ৬৭৩ থেকে ৭২০ বর্গফুট। প্রতিটি ভবনে রয়েছে কমিউনিটি হল, দুটি লিফট ও প্রশস্ত সিঁড়ি। এছাড়া রয়েছে অগ্নিনির্বাপণ ও সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা, ৪০ কেভিএ জেনারেটর ও ২৫০ কেভিএ সাব-স্টেশন। মঙ্গলবার ফ্ল্যাট বরাদ্দ প্রাপ্তদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বরাদ্দপত্র বিতরণ করা হবে। বরাদ্দপ্রাপ্তরা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ফ্ল্যাটে বসবাস শুরু করতে পারবেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য রাজধানীর মতিঝিল, আজিমপুর, মিরপুর, মালিবাগ ও তেজগাঁও এলাকায় পাঁচটি আবাসন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। আজিমপুর সরকারি কলোনিতে রয়েছে ১৭টি ২০ তলা ভবনে ১ হাজার ২৯২টি ফ্ল্যাট, মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনে ২৮৮টি ফ্ল্যাট, মালিবাগে চারটি ২০ তলা ভবনে ৪৫৬টি ফ্ল্যাট এবং মতিঝিলে পাঁচটি ২০ তলা ভবনে ৩৮০টি ফ্ল্যাট। এছাড়াও উদ্বোধনের তালিকায় রয়েছে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আটতলার দুটি আবাসিক ভবন। এগুলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
#
সর্বশেষ হালনাগাদ 4 years আগে
