অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই–অক্টোবর) বৈদেশিক ঋণ প্রবাহ ও ঋণপরিশোধ—দুটো ক্ষেত্রেই প্রায় সমান অঙ্কের লেনদেন করেছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে যত অর্থ ছাড় হয়েছে, প্রায় একই পরিমাণ অর্থ রাষ্ট্রকে ঋণ ও সুদ পরিশোধে খরচ করতে হয়েছে।
রোববার (৩০ নভেম্বর) প্রকাশিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুলাই–অক্টোবর সময়ে উন্নয়ন সহযোগীরা ছাড় করেছে মোট ১.৬৬ বিলিয়ন ডলার। বিপরীতে বাংলাদেশ এই সময় বিভিন্ন ঋণের সুদ ও আসল মিলিয়ে পরিশোধ করেছে ১.৫৮৫ বিলিয়ন ডলার। এতে বোঝা যায়—নগদ প্রবাহে বৈদেশিক সহায়তা আসলেও একই সময়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঋণসেবায় চলে যাচ্ছে।
প্রতিশ্রুত বৈদেশিক সহায়তাও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ১.২০৮ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে পাওয়া ২৫৪.৫৭ মিলিয়ন ডলারের তুলনায় প্রায় ৩৭৫ শতাংশ বেশি।
গত অর্থবছরের শুরুতে (জুলাই ২০২৪) গণঅভ্যুত্থান ও পরবর্তী সরকার পরিবর্তনের কারণে বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক ঋণ আলোচনা কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। নতুন প্রশাসনিক প্রক্রিয়া ও আলোচনার ধীরগতির ফলে প্রতিশ্রুতি ও ছাড় দুই ক্ষেত্রেই বড় ধরনের মন্থরতা দেখা দিয়েছিল। চলতি অর্থবছরে সেই স্থবিরতা কাটতে শুরু করেছে—প্রতিশ্রুত সহায়তা বৃদ্ধির পেছনে সেটিই প্রধান কারণ।
ঋণ ছাড়ের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক গতি দেখা গেছে। জুলাই–অক্টোবর সময়ে উন্নয়ন সহযোগীরা ছাড় করেছে ১.৬৬ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছাড় হওয়া ১.২০ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় প্রায় ৩৮.৫১ শতাংশ বেশি।
সামগ্রিকভাবে, বৈদেশিক ঋণ প্রতিশ্রুতি ও ছাড় উভয়ই বৃদ্ধি পেলেও ঋণসেবার চাপ সমানতালে বাড়ছে—যা সামনের মাসগুলোতে বাংলাদেশের বহিঃঋণ ব্যবস্থাপনায় আরও সতর্কতা ও কৌশলী পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে। ●
অকা/প্র/ই/সকাল/১ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 7 days আগে

