অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
আমদানি কমে স্থানীয় মূল্য সংযোজন বাড়ায় বর্ধিত হচ্ছে বাংলাদেশের পোশাক খাত। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) তৈরি পোশাক শিল্প (আরএমজি) ৬২.৭৮ শতাংশ মূল্য সংযোজন অর্জন করেছে, আগের প্রান্তিকের চেয়ে এক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে ১১.৩৯ শতাংশীয় পয়েন্ট।
অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে এ শিল্পের আমদানিকৃত কাঁচামালের মূল্য ছিল ৪.১১ বিলিয়ন ডলার, যা ছিল আরএমজির মোট রফতানি আয়ের ৩২.৩১ শতাংশ। এতে এ খাতে নেট রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৮.৬১ বিলিয়ন ডলারে, যা পূর্ববর্তী প্রান্তিকের চেয়ে ৬২.৭৯ শতাংশ এবং আগের বছরের একই প্রান্তিকের চেয়ে ৩৭.৩৯ শতাংশ উচ্চ।
২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর থেকে টানা আট প্রান্তিক ধরে মূল্য সংযোজন কমার পর এসেছে এই উন্নতি। এরজন্য আরও ভালো দরে রফতানি বৃদ্ধি এবং কাঁচামাল আমদানি কমার অবদান রয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বরে) পোশাক খাত ৫১.৩৯ শতাংশ মূল্য সংযোজন করে, যা ছিল সবচেয়ে নিম্ন বা ৫.২৯ বিলিয়ন ডলার।
সে তুলনায়, অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে ১২.৭২ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয়ের বিপরীতে, ৪.১১ বিলিয়ন ডলার আমদানি মূল্য পরিশোধিত হওয়ায় – ৮.৬১ বিলিয়ন ডলার মূল্য সংযোজন হয়েছে। এসময়ে মোট রফতানি হয় ১০.২৭ বিলিয়ন ডলার এবং আমদানি হয় ৪.৯৮ বিলিয়ন ডলার। মোট রফতানি আয় থেকে আমদানি বিল বাদ দেওয়ার মাধ্যমে যে নেট রফতানি মূল্য পাওয়া যায়- সেটাই মূল্য সংযোজনকে নির্দেশ করে।
তবে পোশাক রফতানিকারকরা বলছেন, বায়ারদের থেকে কার্যাদেশ বা অর্ডার পাওয়ার অন্তত ৪৫ দিন পর তারা রফতানি করেন, সাধারণত কাঁচামাল সংগ্রহে এসময়টা লেগে যায়। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল্য সংযোজনের তথ্য নেট রফতানি আয়ের প্রকৃত চিত্রের প্রতিফলন নয়।
তারা আরও জানান, রফতানি আয়ে একমাস ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির পর গত প্রান্তিকে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। একইসঙ্গে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে বিশ্ববাজারে পোশাক পণ্যের চাহিদা কমায় তাদের কাঁচামাল আমদানিও কমেছে।
কিউট ড্রেস ইন্ডাস্ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ এইচএম মুস্তাফিজ বলেন, 'সেপ্টেম্বরে নেগেটিভ প্রবৃদ্ধির পর গত প্রান্তিকে কাঁচামালের দাম কমে এবং আমাদের রফতানিও বেড়েছে'। তার আগে বেশি দামেই কাঁচামাল কিনতে হতো বলে জানান তিনি, এতে মূল্য সংযোজনও কম হতো। রফতানি কার্যাদেশ কমায় ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি খাত আবার ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির মধ্যে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন মুস্তাফিজ।
ডিবিএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ জব্বার বলেছেন, গত প্রান্তিকে রফতানি ভালো হয়েছে, যার প্রতিফলন দেখা গেছে নেট রফতানি আয়ে। তবে তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, উৎপাদন সক্ষমতার তুলনায় বর্তমানে অর্ডারের স্বল্পতায় রয়েছেন রফতানিকারকরা।
অকা/পোখা/সকাল, ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 3 years আগে
