অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
পুঁজি বাজারে লেনদেন ও সূচকের উন্নতি ঘটেছে দ্বিতীয় দিনের মতো। ১০ এপ্রিল দেশের প্রধান পুঁজি বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবগুলো সূচকের উন্নতি ঘটে। বেড়েছে লেনদেনও। তবে একই সময় দেশের দ্বিতীয় পুঁজি বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ছিল ভিন্ন চিত্র। এখানে সবগুলো সূচকের অবনতির সাথে কমেছে লেনদেনও।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১১ এপ্রিল ৯ দশমিক ১৮ পয়েন্ট উন্নতি ধরে রাখে। ১১ এপ্রিল ৫ হাজার ১৯৬ দশমিক ০৪ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করে প্রথম আধঘণ্টায় পৌঁছে যায় ৫ হাজার ২৩২ দশমিক ৫২ পয়েন্টে। এ সময় সূচকটির উন্নতি ঘটে ৩৬ পয়েন্ট। লেনদেনের এ অবস্থানে বিক্রয়চাপ শুরু হলে ফের নিম্নমুখী রূপ নেয় ডিএসই সূচক। দিনশেষে স্থির হয় ৫ হাজার ২০৫ দশমিক ২৩ পয়েন্টে। বাজারটির অপর দুই সূচক ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহর উন্নতি ঘটে যথাক্রমে ৫ দশমিক ৯১ ও ৩ দশমিক ২৮ পয়েন্ট।
চট্টগ্রাম স্টকের সার্বিক মূল্যসূচক ২০ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট কমেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে সিএসই-৩০ ও সিএসসিএক্স সূচকের অবনতি ঘটে যথাক্রমে ৩৫ দশমিক ৭৭ ও ১৫ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট। এও সময় বাজারটির লেনদেন নেমে আসে ৬ কোটি টাকায় যা আগের দিন অপেক্ষা ৪ কোটি টাকা কম। ১০ এপ্রিল বাজারটির লেনদেন ছিল ১০ কোটি টাকা।
এ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কর্তৃক নতুন আরোপিত শুল্ক সাময়িক স্থগিতের ঘোষণায় দেশের পুঁজি বাজারে টেক্সটাইল খাত আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ১০ এপ্রিল দুই বাজারেই লেনদেন ও মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় উঠে আসে এ খাতের বেশ কয়েকটি কোম্পানি। সম্প্রতি দেশটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিযোগ্য পণ্যের ওপর মাত্রাতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর থেকে গোটা বিশ্বের পুঁজি বাজারে ধস নামে। বাংলাদেশের পুঁজি বাজারে এর খুব বেশি প্রভাব না পড়লেও টানা দরপতনের শিকার ছিল টেক্সটাইল খাত।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস ১১ এপ্রিল দেশের দুই বাজারেই আচরণের কিছুটা পরিবর্তন ঘটতে দেখা যায়। এ দিন গত কয়েক দিন টানা মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় উঠে আসা কোম্পানিগুলোর অধিকাংশ দরপতনের শিকার হতে দেখা যায়। মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় উঠে আসে কিছু নতুন কোম্পানি।
১১ এপ্রিল ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ কোম্পানি ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি)। এ দিন ৩৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ৩৮ লাখ ৯০ হাজার শেয়ার হাতবদল করে কোম্পানিটি। লেনদেনের দ্বিতীয়স্থানে ছিল বিচ হ্যাচারিজ। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কর্তৃক তদন্তের ঘোষণার পর বেশ কয়েক দিন টানা দরপতনের পর ১১ এপ্রিল আবার কোম্পানিটির লেনদেন ও মূল্যবৃদ্ধি ঘটতে দেখা যায়। ১১ এপ্রিল উভয় ক্ষেত্রেই কোম্পানিটি ডিএসইর শীর্ষ তালিকায় ছিল। ডিএসইর লেনদেনে শীর্ষ দশ কোম্পানির মধ্যে আরো ছিল বেক্সিমকো ফার্মা, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, ওরিয়ন ইনফিউশন, এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, শাইনপুকুর সিরামিকস, লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট ও নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস।
চট্টগ্রাম শেয়ার বাজারে লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা কোম্পানিগুলো ছিল যথাক্রমেÑ ক্রাউন সিমেন্ট, লাভেলো আইসক্রিম, উত্তরা ব্যাংক, রিলায়েন্স ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ড, ওরিয়ন ইনফিউশন, বিচ হ্যাচারিজ, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, শাইনপুকুর সিরামিকস, লাফার্জ হোলসিম ও ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং লিমিটেড।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস ১১ এপ্রিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মাঝে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে রাষ্ট্রায়ত্ব প্রকৌশল খাতের প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে কোম্পানির শেয়ার দর আগের দিনের চেয়ে ১০ টাকা ৮০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বেড়েছে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা হাইডেলবার্গ মেটেরিয়ালসের শেয়ারদর আগের দিনের চেয়ে ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেড়েছে। তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা ড্রাগন সোয়েটারের শেয়ারদর আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে ৮ দশমিক ০৮ শতাংশ।
তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলো হলোÑ এইচ আর টেক্সটাইলস লিমিটেড, বিচ হ্যাচারি, আইসিবি এএমএসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড, লাফার্জ হোলসিম, ইভেন্স টেক্সটাইল, সোনারগাঁও টেক্সটাইল এবং এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান।
সিএসইতে মোট তিনটি কোম্পানিই ছিল মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে। এ গুলো হলো শমরিতা হসপিটাল, ইস্টার্ণ ক্যাবলস ও হামিদ ফেব্রিক্স লি:। তিনটি কোম্পানিরই ১০ শতাংশ দাম বেড়েছে। এ ছাড়া দাম বাড়ার তালিকায় আরো ছিল ওই ম্যাক্স, এইচআর টেক্সটাইলস, দেশবন্ধু পলিমার, হাইডেলবার্গ মেটেরিয়ালস, নুরানি টেক্সটাইলস ও ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অন্যদিকে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মাঝে দর পতনের শীর্ষে উঠে এসেছে ফাস্টফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
ডিএসই সূত্র মতে, কোম্পানির শেয়ার দর আগের দিনের চেয়ে ৩০ পয়সা বা ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ কমেছে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা বারাকা পাওয়ারের শেয়ারদর আগের দিনের চেয়ে ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ কমেছে। তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর আগের দিনের চেয়ে ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ কমেছে।
তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলো হলো- ইন্দোবাংলা ফার্মা, আইএফআইএল ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ড ১, প্রাইম ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, লিন্ডে বাংলাদেশ, ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং এমবি ফার্মা।
সিএসইতে দরপতনের তালিকায় ছিল যথাক্রমে জাহিনটেক্স, আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড, ফিনিক্স ফিন্যান্স, মেট্রো স্পিনিং, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, ইফাদ আটোস ও বিচ হ্যাচারিজ। ●
অকা/পুঁবা/ফর/সন্ধ্যা/১১ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 8 months আগে
