হৃদয় শুভ ●
দু ‘টি পাতা একটি কুঁড়ির শহর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। চা বাগান, আনারস বাগান,লেবু বাগান,হাইল হাওর ও ছোট ছোট পাহাড়ি ছড়া ও টিলা দিয়ে বেষ্টিত সিলেট বিভাগের আওতাধীন শহরটি যেন প্রকৃতির এক সুরম্য নিকেতন৷
আর প্রকৃতির সুরম্য নিকেতনে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত পর্যটকদের সেবায় প্রকৃতির খুব কাছাকাছি গড়ে ওঠেছে অত্যাধুনিক -এসকেডি আমার বাড়ী রিসোর্ট৷
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাধানগর গ্রামে ব্যাক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে এই আধুনিক রিসোর্টটি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর নিরিবিলি পরিবেশের কারণে শ্রীমঙ্গল সব সময়ই ভ্রমণ পিপাসুদের পছন্দের শীর্ষে অবস্থান করে। ভ্রমণপিপাসুদের ভালো লাগার বিষয়গুলো এখানে রয়েছে। নিবিড়ভাবে গ্রামবাংলার লোকজ ও প্রকৃতিগত রূপ দেখার নয়নাভিরাম পরিবেশ এসকেডি আমার বাড়ি রিসোর্টে বিদ্যমান। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সজল কুমার দাশ নিজ উদ্যোগে ২০১৯ সালে এসকেডি আমার বাড়ী রিসোর্ট প্রতিষ্ঠা করেন। রিসোর্টটি মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার জেরিন চা বাগানের পাশে অবস্থিত , ঢাকা থেকে মাত্র ১৮০ কিলোমিটারের পথ। রিসোর্টে যাওয়ার পথে আপনার চোখ জুড়িয়ে যাবে দু’পাশের উঁচু-নিচু টিলায় সারি সারি চা গাছ আর চিরচেনা সবুজের সমারোহ। রিসোর্টটিতে ঢুকতেই চোখে পড়বে একটি পাহাড়ী ছড়া,সেই ছড়ার পানির শব্দে পর্যটকরা হারিয়ে যান অন্য এক জগতে৷ এ রিসোর্টে পর্যটকদের জন্য রয়েছে পাঁচতলা একটি ভবন। এর প্রতিটি কক্ষই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পর্যটকদের সুবিধার জন্য রয়েছে দুটি লিফট। ব্যক্তিগত গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধাও রয়েছে। সব দিক থেকে রিসোর্টটি বেশ নিরাপদ। এসকেডি আমার বাড়ী রিসোর্টটির মালিক শিশুবেলা থেকে সাহিত্য ও সংস্কৃতিমোদী বলেই রিসোর্টটির আয়োজনগুলো অত্যন্ত পরিপাটি, সাজানো গোছানো এবং শৈল্পিক। ভিতরের আসবাবপত্র রুচিশীল, মূল্যবান এবং অভিজাত। রয়েছে বিশাল ডাইনিং হল। বুফে এবং বারবিকিউ এর ব্যবস্থা। দক্ষিণা হাওয়া ও শিশির ভেজা রিসোর্টের লন আর নিরিবিলি মনোরম পরিবেশ আপনাকে সতেজ করবে খুব অল্প সময়ে। রিসোর্টটিতে নয়নাভিরাম একটি সুইমিং পুল রয়েছে পর্যটকরা এই রিসোর্টে রুম বুকিং করলে সেই সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে পারেন৷ রিসোর্টের পাশ দিয়ে বয়ে চলা পাহাড়ি ছড়ার পাশে রয়েছে একটা ওয়াক-ওয়ে এবং যার পাশেই রয়েছে একটি ফুল বাগান৷ এছাড়াও রিসোর্টটিতে রয়েছে বাচ্চাদের খেলার জন্য কিডস জোন আরো আছে পর্যটকদের জন্য হেলথ জোন৷
রিসোর্টটির ছাদে উঠলে পর্যটকরা মুগ্ধ দৃষ্টিতে উপভোগ করতে পারবেন সাতটি পাহাড়ের পাদদেশ৷
সম্প্রতি রিসোর্টে বেড়াতে আসা পর্যটক জাহিদুল ইসলাম জানান, এখানকার পরিবেশ অত্যন্ত ভালো,পরিবার নিয়ে যতবারই ঢাকা থেকে ঘুরতে এসেছি শ্রীমঙ্গল ততবারই আমি এখানে উঠেছি৷ রিসোর্টটিতে আমরা আসলে নিজেদের বাজেটের মধ্যেই সকল সুবিধা পাই তাই এখানে বারবার আসা৷
পর্যটক শায়লা রহমান বলেন,আমি একজন সলো ট্রাভেলার৷ মাঝে মাঝে দেশ ঘুরতে একা বেরিয়ে পড়ি,নারী ট্রাভেলার হিসেবে এখানে থেকে আমি খুব স্বস্তি বোধ করি৷ রিসোর্টটি যেমন মানে ভালো তেমনি এদের ব্যবহারও খুব ভালো৷
রিসোর্টের নিজস্ব রেস্তোরায় বাংলাদেশি, ইন্ডিয়ান, চায়নিজ, থাই কিংবা অন্যান্য বিদেশি খাবারের সুব্যবস্থা রয়েছে। পাবেন দেশি ও বিদেশি ফলের নানা রকম জুস, বেকারি ও পেস্ট্রি সপ। রিসোর্টের ভেতরে খেলতে পারেন নিজের মতো করে। হাঁটতে পারেন ফুলের বাগান বা ছড়ার ধারে। সাঁতার কাটতে পারেন সুইমিং পুলের স্বচ্ছ পানিতে। ইচ্ছে করলে বসতে পারেন সুইমিং পুলের ধারে।
রিসোর্টের কাছেই জেরিন চা বাগানের অবস্থান,মাত্র পাঁচ মিনিটের পথ হাঁটলেই পৌছে যাবেন এক অন্য জগতে যেটাকে চায়ের রাজ্যও বলেন অনেকে৷
যারা নগরের ইট কাঠের যাপিত জীবনের ক্লান্তিতে হাঁপিয়ে উঠেছেন তাঁরা কিছুটা সময়ের জন্য একটু নির্মল বাতাস আর আনন্দ পেতে চান তারা নির্দ্বিধায় চলে যেতে পারেন এসকেডি আমার বাড়ী রিসোর্টে। সেই সঙ্গে আপনি উপভোগ করতে পারেন লোকজ সঙ্গীত। এখানে পরিবার নিয়ে থাকা,খাওয়াসহ পিকনিক ও নাটক, সিনেমার সুটিং করার বিশেষ সুযোগ-সুবিধা রয়েছে পাশাপাশি বড় বড় কর্পোরেট কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের কনফারেন্স আয়োজন করার জন্য রয়েছে বিশাল হলরুম।
রিসোর্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে এর সত্বাধিকারী সজল কুমার দাশ বলেন,আসলে মূলত মধ্যবিত্তদের উদ্দেশ্য করে এই রিসোর্টটি আমি নির্মাণ করি৷ সাড়ে তিন হাজার টাকা থেকে এই রিসোর্টের রুম ভাড়া শুরু হয় যার সঙ্গে ব্রেকফার্স্ট ও সুইমিং পুল ফ্রি থাকে৷ পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে আমরা এই রিসোর্টে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন সুযোগ সুবিধা যুক্ত করে চলেছি৷ তিনি বলেন, গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত, শরৎ, হেমন্ত ও বসন্ত সব ঋতুতেই এসকেডি আমার বাড়িতে বেড়াতে প্রকৃতিমগ্ন ভ্রমণবিলাসীরা স্বচ্ছন্দবোধ করবেন বলে আমার বিশ্বাস।
যেভাবে যেতে পারেন এসকেডি আমার বাড়ি
ঢাকা বা দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে আসতে পারেন শ্রীমঙ্গল। রেলওয়ে স্টেশন থেকে সিএনজি অটোরিকশা অথবা ইজিবাইক নিয়ে সহজেই পৌছতে পারেন এসকেডি আমার বাড়ি রিসোর্টে। ভাড়া নিবে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। পৌছতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট। যারা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে যাবেন তাদের এসকেডি আমার বাড়ি রিসোর্টটি পেতে হলে শ্রীমঙ্গল শহর থেকে যে রাস্তাটি কমলগঞ্জের দিকে গেছে সে পথে যেতে হবে। তারপর পৌছে যাবেন রাধানগর স্বপ্নময় এসকেডি আমার বাড়ি। ●
অকা/প/সকাল, ৯ মে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 2 years আগে

