অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
গত ডিসেম্বর অবধি স্থিতিভিত্তিক বিভিন্ন উপাত্ত তুলে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক এর গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, আমি আগেই বলেছিলাম শ্রেণিকৃত ঋণের পরিস্থিতি ভালোর দিকে যাবে না; অন্তত আপতত যাবে। যে নতুন তথ্য আসছে তাতে শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। বর্তমান প্রান্তিকে শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। সেপ্টেম্বর তা ছিল ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ টাকার অংকে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৪ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা; যা সেপ্টেম্বরে ছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা। এটা আরো বাড়বে। তিনি বলেন, শ্রেণিকৃত ঋণের যে চূড়া সেটা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছায়নি। সেটা কমাতে আরো সময় লাগবে। এ ব্যাপারে আইনগত কিছু পরিবর্তন হচ্ছে। শ্রেণিকৃত ঋণ হিসাব তৈরির সময়কাল আগে ১৮০ দিন ছিল তা ৯০ দিন করা হচ্ছে।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাত নিয়ে আরো কিছু শংকা আছে! আমানত প্রবৃদ্ধির হার ৭-৮ শতাংশ যেটা তা গ্রহণযোগ্য নয়। এখানে কাজ করতে হবে। জনগণের কাছে ব্যাংকিং খাতের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। ব্যালেন্স অফ পেমেন্টের উদ্ধৃত্ত ও বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চিতি আরো বাড়তে পারলে আস্থা আনা সম্ভব। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, ব্যাংক থেকে আমানতকারীদের টাকা পেতে কোনো সমস্যা হবে না।
২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মতিঝিলস্থ বাংলাদেশ ব্যাংক এর সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক এর গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে মোট ঋণ ও অগ্রিমের পরিমাণ ১৭ লাখ ১১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক এর মূল ভবনের ৪ তলায় অবস্থিত পদস্থ নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংক এর গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্বের সকল কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বাইরের কেউ ঢুকতে পারে না। এটা নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার বিষয়। এ ক্ষেত্রে আমার করণীয় নেই। বিষয়টি নিয়ে একাধিক সাংবাদিক তখন বলেন, অতীতে সাংবাদিকদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রবেশে প্রথম প্রথম প্রতিবন্ধকতা থাকলেও পরে তা শিথিল করে দেওয়া হয়। নিকট অতীতের গভর্নরের কার্যকালে সাংবাদিকদের তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় বিষয়টিতো তেমনই; সাংবাদিকের এমন যুক্তিতে গভর্নর রেগে গিয়ে বলেন, তুলনা করবেন না। তিনি বলেন, নিরাপত্তা বিষয়তো সাংবাদিকদের জন্য নয়: আমিতো বলিনি সাংবাদিক আসতে দেওয়া হবে না। সকলের ক্ষেত্রে একই নিয়ম প্রযোজ্য। তিনি বলেন, আমরা কী হুমকি ধমকি পাচ্ছি না; আমাদের পরিবার নিয়ে কী কথাবার্তা হচ্ছে না? আমার পরিবার নিয়েও হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিতে হবে। নিকট অতীতের গভর্নরের নাম উচ্চারণ করে একজন সাংবাদিক বলেন, তখন নিষেধাজ্ঞা ছিল এখন কেন! এ কথায় ক্ষিপ্ত হয়ে গভর্নর বলেন, তালুকদার সাহেব নিয়ম করেছেন; আমি আহসান মনসুর করলাম।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংক এর ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার ও ড. মো. হাবিবুর রহমানসহ কজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। ●
অকা/ব্যাংখা/প্র/সন্ধ্যা/২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 8 months আগে