অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরু থেকেই দেশের রফতানি খাতে দৃশ্যমান শ্লথগতি তৈরি হয়েছে, যার প্রভাব ক্রমে প্রকট আকার ধারণ করছে। বিশেষ করে আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত টানা চার মাস ধরে পণ্য রফতানি আয় আগের বছরের তুলনায় নিম্নমুখী। বিশ্বব্যাপী চাহিদা কমে যাওয়া, প্রধান বাজারগুলোতে মন্দাভাব, এবং অর্ডার সংকোচনের মতো কারণগুলো এই ধীরগতিকে আরও স্পষ্ট করেছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান এই নিম্নমুখী প্রবণতার চিত্র তুলে ধরে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ মোট রফতানি করেছে ৩ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, যা গত অর্থবছরের একই মাসে করা ৪ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় উল্লেখযোগ্য কম। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে এক মাসেই রফতানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
বিশ্লেষকদের মতে, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের খুচরা বাজারে ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস, এবং প্রধান পোশাক ব্র্যান্ডগুলোর অর্ডার পুনর্গঠন এ পতনের পিছনে বড় ভূমিকা রাখছে। এ ছাড়া বৈদেশিক বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি খাত আরও চাপের মধ্যে পড়েছে।
যদিও মাসওয়ারি হিসেবে সামান্য স্বস্তির ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। গত অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বর মাসে রফতানি আয় প্রায় ২ শতাংশের কম হারে বেড়েছে। এই প্রবৃদ্ধি সীমিত হলেও খাতটির পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনার একটি ক্ষীণ আভাস দেয়, যা নীতিনির্ধারকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যাল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
পাঁচ মাসের সামগ্রিক চিত্রে মিশ্র সংকেত দেখা যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মোট রফতানি আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ০ দশমিক ৬২ শতাংশ—যা সামান্য হলেও গত বছরের তুলনায় কিছুটা অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়। তবে এই প্রবৃদ্ধি এতই দুর্বল যে এটি পুরো খাতের অন্তর্নিহিত সমস্যাগুলো ঢেকে রাখতে পারছে না।
অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করছেন, অর্ডার পরিস্থিতি দ্রুত উন্নত না হলে এবং নতুন বাজার বৈচিত্রকরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না এলে আসন্ন মাসগুলোতে রফতানির ওপর চাপ আরও বাড়তে পারে। একই সঙ্গে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি, লজিস্টিক সমস্যা এবং আন্তর্জাতিক বাজারের অনিশ্চয়তা রফতানিকারকদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে থাকবে। ●
অকা/প্র/ই/দুপুর/৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 1 day আগে

