অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
ভোলার তজুমদ্দিনে ঠিকাদারের গাফিলতি ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় নির্ধারিত মেয়াদের প্রায় তিন বছর পরও শেষ হয়নি ফজিলাতুন্নেছা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ। ফলে শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ওয়াশব্লøক সঙ্কটে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ছাত্রীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তিন কোটি ৩৩ লাখ ৮২ হাজার টাকা ব্যয়ে ফজিলাতুন্নেছা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের পাঁচ তলাবিশিষ্ট নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের কাজ পায় মেসার্স এসএস অ্যান্ড এমটি এন্টারপ্রাইজ নামের গোপালগঞ্জের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান; কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠান সাব-ঠিকাদার দিয়ে কাজটি বাস্তবায়ন করছে বলে জানা গেছে।
সাব-ঠিকাদার দিয়ে ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। প্রকল্পের মেয়াদ অনুযায়ী দুই বছরে অর্থাৎ ২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষ করে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করার কথা থাকলেও, কবে নির্মাণ কাজ শেষ হবে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
২১ অক্টোবর বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, নতুন ভবনের আশায় পুরনো ভবন ভেঙে এবং জায়গা ছেড়ে দিয়ে বেকায়দায় পড়েছে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপ। ভবনের কাজ শুরুর প্রায় পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো অর্ধেক কাজ বাকি রয়ে গেছে। যে কারণে প্রতিনিয়ত বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ঠিকাদারের গাফিলতি ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর ভোলার উদাসীনতায় নির্ধারিত সময়ে নতুন ভবনের কাজ শেষ না হওয়ায় বিদ্যালয়ের পুরনো ভবনের ব্যবহার-অনুপযোগী চারটি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে কর্তৃপক্ষ। বৃষ্টি হলে পুরনো এসব শ্রেণিকক্ষের ছাদ বেয়ে পানি পড়ে। অন্য দিকে ওয়াশব্লøক না থাকায় ছাত্রীদের পড়তে হয় বেশি সমস্যায়।
কর্তৃপক্ষ জানায়, নির্মাণ কাজ এক দিন চললে আবার এক মাস বন্ধ থাকে। ঠিকাদারের এমন গাফিলতির কারণে বিদ্যালয়ে ভেতরে যে কেউ অবাধে প্রবেশ করতে পারে। এতে ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া নির্মাণসামগ্রী বিদ্যালয়ের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার ঘটতে পারে। নতুন ভবনের কাজ যেটুকু হয়েছে তাতে দেয়ালের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। আবার পুরো ভবনের দেয়ালে শেওলা পড়ে গেছে।
বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নকারী মো: তানিম বলেন, আমি এসএস অ্যান্ড এমটি প্রতিষ্ঠানের কেউ না। কাজটি ক্রয় করে বাস্তবায়ন করছি। কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে সাইট বুঝিয়ে দিতে না পারায় কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। ফলে সময়মতো কাজ শেষ করতে পারিনি। তবে আগামী ডিসেম্বর নাগাদ কাজ শেষ হবে বলে আশা করি।
জানতে চাইলে ফজিলাতুন্নেছা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো: আলমগীর হোসেন বলেন, প্রায় তিন বছর আগেই ভবনটির কাজ শেষ করে বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারের গাফিলতিতে এখনো কাজ শেষ হয়নি। কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে বলা অনিশ্চিত। ভবনসঙ্কটের কারণে প্রতিনিয়ত পাঠদানে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কাজের মানের বিষয়ে কিছুই বলব না, আমি চাই আগামী ডিসেম্বর নাগাদ কাজ শেষ করে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনটি হস্তান্তর করা হোক।
ভোলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সালেহ মো: নুর নবী বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির বিষয়ে অধিদফতরে চিঠি দেয়া হয়েছে। কাজে গাফিলতির কারণে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর এসএস অ্যান্ড এমটি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। তারা আর কখনো শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের কোনো টেন্ডারে অংশ নিতে পারবে না। তারপরও যত দ্রুত সম্ভব আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাজটি আদায় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ●
অকা/শিক্ষাখা/ফর/রাত/২৩ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 1 year আগে

