অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদরা যাতে ব্যাংক থেকে অর্থ সরানো বা পাচার করতে না পারে সে জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে পরিচিত বা স্বজনপ্রীতি করে ছাড় দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি। ৮ আগস্ট সকালে ও বিকালে দুই দফায় দেশের সব রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকের ‘চিফ অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কমপ্লায়েন্স’ অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে এ সতর্ক বার্তা দেয়া হয়।

বৈঠক শেষে বিএফআইইউর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে কড়া বার্তা দিয়ে বলা হয়েছে, দেশে এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতি চলছে। অনেক দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদ, সন্ত্রাসী অর্থ সরানো ও অর্থ পাচারের চেষ্টা করবে। তাই এখন থেকে যেকোনো ধরনের লেনদেনে মানি লন্ডারিংয়ের সব নিয়মনীতি শতভাগ পরিপালন করতে হবে। কোনো লেনদেন সন্দেহজনক হলেও জানাতে হবে। কোনো প্রকার পরিচিত, স্বজনপ্রীতি করে ছাড় দেয়া যাবে না। যদি কেউ ছাড় দেয় তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে।

বৈঠকে বলা হয়, যেকোনো ধরনের সন্দেহজনক লেনদেন হলে সঙ্গে সঙ্গে সন্দেহজনক লেনদেন (এসটিআর) ও সন্দেহজনক কার্যক্রম (এসএআর) প্রতিবেদন দিতে হবে। এসটিআর বা এসএআর অনুযায়ী প্রয়োজন মনে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ বা জব্দ করা হবে। সাধারণত সার্কুলারের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে এ ধরনের নির্দেশনা দিয়ে থাকে বিএফআইইউ। তবে বিএফআইইউ-প্রধান না থাকায় সার্কুলার জারি করা সম্ভব হয়নি।

এর আগে ৬ আগস্ট সকালে স্বেচ্ছাচারিতা এবং অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তোপের মুখে পদত্যাগ করেন বিএফআইইউর প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চার ডেপুটি গভর্নর এবং একজন উপদেষ্টা পদত্যাগ করেন। এছাড়া আন্দোলনরতদের এক বিজ্ঞপ্তিতে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার রাতে দেশ ছেড়েছেন বলে দাবি করা হয়।

বিএফআইইউর আরেকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ‘আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, অনেক দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদ তাদের অ্যাকাউন্টে থাকা দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা সরিয়ে নেয়ার চেষ্টায় রয়েছেন। আমরা সাধারণত কর্তৃপ বা আইন-শৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর পরামর্শ ছাড়া কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে পারি না। তবে এটি যথাসম্ভব ঠেকাতেই ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হবে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘মতাচ্যুত সরকারের গুডবুকে থাকা অনেক ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালীরা অন্যায়-অনিয়ম করলেও আমরা চাইলেও অনেক পদপে নিতে পারিনি। নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর আমাদের কাছে অর্থ পাচার নিয়ে অনেক তথ্যই জানতে চাইবে, এটাই স্বাভাবিক। আমরাও সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। ●

অকা/শিবা/ফর/সন্ধ্যা/৯ আগস্ট, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

সর্বশেষ হালনাগাদ 1 year আগে

Leave A Reply

Exit mobile version