অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপ (বেজা) ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপরে (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানিয়েছেন, বাগেরহাটের মোংলায় চীনা ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষায়িত দ্বিতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির মৌখিক প্রস্তাব পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে এ বিষয়ে চীনা সরকারের কাছে লিখিত প্রস্তাব চেয়েছে বাংলাদেশ। তাদের লিখিত প্রস্তাব পেলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে সরকার। ১ জুন চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্মেলন শেষে বিডা কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এই তথ্য জানান।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, ‘মোংলায় দ্বিতীয় বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য মৌখিক প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। লিখিত প্রস্তাবের জন্য তাদের অ্যাম্বেসিকে জানিয়েছি। চীন সরকারের কাছ থেকে আগে লিখিত প্রস্তাব আসতে হবে। এলে তারপর এটি নিয়ে কাজ করব। মৌখিক প্রস্তাবে আমরা কিছু করতে রাজি নই।’

‘চীনের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (প্রথম) তৈরির কাজ চলছে। এ নিয়ে চীন সরকারের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের গত চীন সফরের পর ৩০টি চীনা কোম্পানি তাদের অ্যাম্বেসিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, তারা চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি নিতে এবং ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি চালু করতে চায়।’

সম্মেলনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অন্য দেশকে ফোকাস করে আলাদাভাবে এত বড় কনফারেন্স করছি না, কারণ আমরা মনে করি ৫-১০ বছরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিদেশী বিনিয়োগকারী দেশ হবে চীন।’

চাঁদপুরের বাহের চরে কৃষিভিত্তিক একটি প্রকল্প চালুর বিষয়ে ‘পাওয়ার চায়না ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ লিমিটেড’-এর সঙ্গে বেজার একটি দ্বিপীয় সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বার হয়েছে বলে জানান চৌধুরী আশিক মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘এ প্রকল্পটির উদ্যোগ অনেক আগেই নেয়া হয়েছিল। তবে সেটি এগোয়নি। এই সরকার দায়িত্বে আসার পর এ নিয়ে আলাপ–আলোচনা চালায়। এরপর এই এমওইউ হয়েছে। সেখানে তারা তিন হাজার একরের ওপর জমিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। তিন ফেজে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। আমাদের ল্য প্রথম ফেজে এক হাজার একর জমিতে এই প্রকল্প চালু করা। এখন কোম্পানিটি সেখানে গিয়ে কিছু পরীামূলক চাষাবাদ করবে। চাষাবাদ হবে এবং ওপরে বাণিজ্যিক সৌরবিদ্যুৎ প্ল্যান্ট থাকবে। এখানে কৃষি উৎপাদনের মাধ্যমে স্থানীয়দের কর্মসংস্থান বাড়বে। সরকারের নজর সেখানে নারীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা। প্রথম দিকে তিনশ মানুষের কর্মসংস্থান হলেও ধীরে ধীরে এ সংখ্যা আরো বাড়বে। তবে পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে তিন থেকে পাঁচ বছর লেগে যাবে। চীনা বিনিয়োগকারীরা হানিসাকলের মতো কিছু পণ্য কম খরচে এখানে উৎপাদন করে চীনে রফতানি করতে চায়। কারণ চীনে হানিসাকলের অনেক দাম। এটি করলে দুই দেশই উপকৃত হবে।’

সম্মেলনে ১৪৩টি চীনা কোম্পানির প্রায় আড়াইশ জন এবং দেশী বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী মিলিয়ে প্রায় পাঁচশজন অংশ নেন। চীনের চারটি চেম্বার অব কমার্স এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন, গার্মেন্টস, সোলার সিস্টেম, অ্যাগ্রো বিজনেসের সঙ্গে যুক্ত চীনের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ছিলেন এ সম্মেলনে।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ‘আগে কখনো একসঙ্গে এত বিনিয়োগকারী বা ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দেশে আসেনি। প্রতিনিধিদের মধ্যে ইতিবাচক আগ্রহ ল্য করা গেছে। তবে এটা ভাবার কোনো কারণ নেই, তারা আসছেন মানেই বড় একটা বিনিয়োগ চলে আসবে। বিনিয়োগের বিষয়টি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এর প্রথম ধাপ হচ্ছে, তাদেরকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা ও পরিবেশের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া। পাশাপাশি সরকার, ব্যাংক, ল ফার্ম, কনসালটেন্ট, ট্যাক্স কনসালটেন্ট সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া এবং আদর্শ কিছু কারখানা পরিদর্শন করানো।  ●

অকা/বাণিজ্য/ফর/রাত/১ জুন, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ

সর্বশেষ হালনাগাদ 7 months আগে

Leave A Reply

Exit mobile version