ইটের বিকল্প পরিবেশ বান্ধব কনক্রিট ব্লক উৎপাদনে যাচ্ছে ম্যাক্স গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ম্যাক্সক্রিট। এ লক্ষ্যে মানিকগঞ্জের জাগীরে কারখানা নির্মাণে ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল ২০২৪) কারখানার উদ্বোধন করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
পূর্তমন্ত্রী বলেন, ঢাকার আশপাশসহ সারাদেশে অসংখ্য ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এই ভাটায় মাটি পুড়িয়ে ইট তৈরির কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, পরিবেশের সুরক্ষায় কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে হবে। মাটির ইটের পরিবর্তে সরকার পরিবেশ বান্ধব ব্লক ব্যবহারে জোর দিচ্ছে। নির্মাণকাজে পরিবেশ বান্ধব ব্লক ব্যবহার করার আহবান জানান পূর্তমন্ত্রীর।
ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এমডি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গণপূর্ত সচিব মো: নবীরুল ইসলাম, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সিদ্দিকুর রহমান সরকার, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার, হাউজিং এন্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহপরিচালক মোঃ আশরাফুল আলম, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার প্রমুখ।
ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এমডি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, পরিবেশের ওপর নির্মাণকাজের ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে আনার লক্ষ্যে উন্নয়নমূলক কাজে ইটের ব্যবহার কমাতে উৎসাহিত করছে সরকার। কনক্রিটের ব্লক ব্যবহার করার মাধ্যমে একটি বিল্ডিংয়ের ২০ শতাংশ কাঠামোগত খরচ খরচ কমানো সম্ভব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গতানুগতিক তৈরি ইটের বহুল ব্যবহার হয়ে আসছে। লাল ইট তৈরিতে কৃষি জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি এবং প্রচুর পরিমাণ জ্বালানি প্রয়োজন হয় যা দেশের বনজ সম্পদ এবং কৃষি জমি হ্রাসের অন্যতম কারণ। অন্যদিকে এএসি ব্লক বালি, সিমেন্ট, অ্যালুমিনিয়াম পেস্ট এবং পানিসহ প্রাকৃতিক উপকরণ থেকে তৈরি। পরিবেশের ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, বিভিন্ন কারণে এই ইন্ড্রাস্ট্রি কনসেপ্ট মাথায় আসার পারও চার বছর লেগে যায় এই কারখানা তৈরিতে। আমি মনে করি এরকম ইন্ড্রাস্ট্রি আরও ১০টা হওয়া উচিত। আমাদের কনক্রিট ব্লক তাপ এবং শব্দ নিরোধক, এটি অগ্নি প্রতিরোধক এবং পরিবেশবান্ধব।
২০২৫ সালের মধ্যে পোড়ামাটির ইটের ব্যবহার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে যে পরিকল্পনা সরকার গ্রহণ করেছে তা বাস্তবায়ন করতে ইটের জায়গায় ব্লকের ব্যবহার করার আহবান জানান ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান।
প্ল্যান্টটি ঈদুল আজহার পরে পূর্ণ উৎপাদনে যাবে বলে জানান ম্যাক্স গ্রুপ। এই প্ল্যান্টটির বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা তিন লাখ ৬৫ হাজার ঘনমিটার। পরিবেশ রক্ষা করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সমস্যা মোকাবেলা করতে বাংলাদেশে এএসি ব্লক এবং প্যানেল প্রবর্তনের উদ্যোগ নিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে ম্যাক্স গ্রুপ।
জানা গেছে, পরিবেশ ও মাটির উর্বরতা রক্ষার্থে ২০২৫ সালের মধ্যে ইটভাটা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়াও পোড়ামাটির ইটের ব্যবহার কমাতে নির্মাণস্থলে বিকল্প ইট এবং ব্লক ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে সরকার।
সর্বশেষ হালনাগাদ 1 year আগে