অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে মূল্য সংযোজিত (ভ্যালু অ্যাডেড) পণ্য রফতানিতে এশিয়ার তিনটি দেশ সাফল্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে কম্বোডিয়া, দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ এবং তৃতীয় স্থানে ভিয়েতনাম। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দীর্ঘদিন ধরে শক্ত অবস্থান থাকা দেশগুলো এই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেনি। উদাহরণস্বরূপ, শ্রীলঙ্কা রফতানির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলেও প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ব্যর্থ হয়েছে, আর বেশ কয়েকটি দেশ রপ্তানি হার কমেছে। শুক্রবার প্রকাশিত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হার ৪ দশমিক ৯ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকবে। এর আগে গত ১৬ অক্টোবর প্রকাশিত আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক-এও একই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, যা এবারের হালনাগাদ প্রতিবেদনেও বহাল রাখা হয়েছে।
আইএমএফ বিশ্লেষণে বলা হয়, এশিয়ার দেশগুলোর প্রধান রফতানি গন্তব্য হচ্ছে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা। এই অঞ্চলগুলোতে পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে যেমন বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়, তেমনি প্রবাসী শ্রমিকদের রেমিট্যান্সও এই অর্থপ্রবাহকে শক্তিশালী করে। এসব আয়ে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা আমদানি ব্যয় মেটানো ও মুদ্রার স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
যুক্তরাষ্ট্র সব সময়ই একটি প্রতিযোগিতামূলক রফতানি বাজার হিসেবে পরিচিত। দেশটি শ্রমবাজার উন্নয়ন, কর্মীদের জীবনমান বৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজিত পণ্যের জন্য বিশেষ নীতি সহায়তা দিয়ে থাকে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রফতানিতে “মূল্য সংযোজনের মাত্রা” যত বেশি, তত বেশি বাজার বিস্তারের সুযোগ তৈরি হয়। এই প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন এশীয় দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে— কে বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারে এবং মার্কিন বাজারে টিকে থাকতে পারে।
এই প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছে কম্বোডিয়া, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের মূল্য সংযোজিত পণ্য রফতানি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ২১ শতাংশে। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ, যা দেশটিকে দ্বিতীয় অবস্থানে নিয়ে এসেছে। তৃতীয় স্থানে থাকা ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ।
বাংলাদেশের রফতানির মূল শক্তি এখনো তৈরি পোশাক খাত, তবে এর পাশাপাশি চামড়াজাত পণ্য ও হস্তশিল্পেও মূল্য সংযোজন বাড়ছে। এই পরিবর্তন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রফতানি প্রবৃদ্ধিকে আরও ত্বরান্বিত করেছে।
অন্যদিকে, একসময়ের শীর্ষ রফতানিকারক জাপান, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও তাইওয়ানের মতো দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে মূল্য সংযোজিত রফতানিতে পিছিয়ে পড়েছে— যা আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার মানচিত্রে নতুন ভারসাম্য তৈরি করেছে। ●
অকা/প্র/ই/সকাল/২৫ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 9 hours আগে

