অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ছাড়া কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকতে পারে না—পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি মিলনায়তনে এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম চৌধুরী, আর স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও বি এম ইউসুফ আলী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা কেবল নৈতিকতার বিষয় নয়—এটি যেকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্থায়িত্ব, গ্রাহক আস্থা, এবং বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার ভিত্তি। তাঁর মতে, যে প্রতিষ্ঠানে অভ্যন্তরীণ শাসনব্যবস্থা সুদৃঢ়, যেখানে সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতা থাকে এবং ব্যবস্থাপনা থেকে মাঠপর্যায়ের কর্মী পর্যন্ত সবার কার্যক্রমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়—সেই প্রতিষ্ঠান সহজেই যেকোনো সংকট পার করতে সক্ষম হয়। তিনি বলেন, পপুলার লাইফ দীর্ঘদিন ধরে এই নীতিতে অবিচল থেকে গ্রাহকের আস্থা অর্জন করেছে, যা প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের অন্যতম শীর্ষ বীমা কোম্পানিতে পরিণত করেছে।
বীমা খাতের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশে এখনো কিছু বীমা কোম্পানি গ্রাহকের দাবি সময়মতো পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়, যা মানুষের আস্থা দুর্বল করে। অথচ বীমা খাতের মূল শক্তিই হলো নির্ভরযোগ্যতা এবং সঙ্কটে গ্রাহকের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি। তিনি মনে করেন, খাতটির টেকসই উন্নয়নের জন্য কঠোর তদারকি, আধুনিক রেগুলেটরি সংস্কার এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে মন্ত্রণালয় পর্যন্ত সমন্বিত জবাবদিহিতা অপরিহার্য। আর্থিক খাতে দুর্নীতি ও অনিয়ম দূর করে স্বচ্ছ পরিবেশ গড়ে উঠলে শুধু বীমা খাতই নয়, পুরো আর্থিক ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে।
অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পপুলার লাইফ গত ২৫ বছরে গ্রাহকের স্বার্থকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সেবা প্রদান করেছে। একযোগে কাজ করলে এবং পেশাদারিত্ব ধরে রাখলে একটি প্রতিষ্ঠান কত দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে—পপুলার লাইফ তারই বাস্তব উদাহরণ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, কর্মকর্তা-কর্মচারী, এজেন্ট, পরিচালনা পর্ষদ এবং গ্রাহকদের সম্মিলিত অঙ্গীকারের মাধ্যমে পপুলার লাইফ শিগগিরই বাংলাদেশের শীর্ষ বীমা কোম্পানির অবস্থান আরও সুসংহত করবে।
কোম্পানির সিইও বি এম ইউসুফ আলী বলেন, পপুলার লাইফ শুধু বীমা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নয়—এটি দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। গত দুই দশকে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে, যা শুধু আর্থিক স্থিতিশীলতা নয়, সামগ্রিক সামাজিক উন্নয়নেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তিনি জানান, কোম্পানিটি দীর্ঘদিন ধরে ‘ট্রিপল-এ’ ক্রেডিট রেটিং ধরে রেখেছে—যা তাদের আর্থিক শক্তি, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা এবং গ্রাহকের দাবি পরিশোধে প্রতিষ্ঠানের ধারাবাহিকতার প্রমাণ।
অনুষ্ঠানে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স নতুন নাম হিসেবে ‘পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি পিএলসি’ ঘোষণা করে। এ সময় ‘প্রেরণা’ শিরোনামে প্রতিষ্ঠানের বিশেষ প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়, যেখানে কোম্পানির ২৫ বছরের যাত্রা, অর্জন, সেবা সম্প্রসারণ, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং ভবিষ্যৎ কৌশল তুলে ধরা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত ডকুমেন্টারিটিও কোম্পানির উন্নয়নের গল্পকে আরও জীবন্তভাবে উপস্থাপন করে। ●
অকা/বীখা/ই/রাত/২৬ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 2 weeks আগে

