অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
টানা চার দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। ফলে সৈকত শহরে ধারণক্ষমতার প্রায় চার গুণ বেশি পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। এই চার দিনে প্রায় ১শত ৫০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, শহরের ৫ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউসের শতভাগ ইতোমধ্যে বুকিং হয়ে গেছে। এগুলোতে দৈনিক ১ লাখ ৮৭ হাজার মানুষের ধারণক্ষমতা থাকলেও দুর্গাপূজায় চার দিনের ছুটিতে পাঁচ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটছে। এ কারণে অতিরিক্ত ৩ লাখ ১৩ হাজার পর্যটকের আবাসনের জন্য তারা বিকল্প ব্যবস্থা করেছেন।
পর্যটনসংশ্লিষ্ট একাধিক সংস্থা জানায়, পর্যটকের সমাগম ঘিরে এখন সরগরম সৈকতগুলো। ১০ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া টানা ছুটিতে প্রায় পাঁচ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করবেন। এর মধ্যে শুধু প্রতিমা বিসর্জনের দিন ১৩ অক্টোবর দুই লাখ মানুষের সমাগম হবে।
কক্সবাজার হোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, দুর্গাপূজার ছুটি উপলক্ষে ৭ অক্টোবর থেকে পর্যটকরা কক্সবাজার আসতে শুরু করেছেন। এর মধ্যে ৯ অক্টোবর থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত তিন দিনে প্রায় তিন লাখ এবং ১২ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত দুই লাখ পর্যটকের সমাগম হবে। সব মিলিয়ে চার দিনের ছুটিতে অন্তত পাঁচ লাখ পর্যটক কক্সবাজার থাকছেন। ফলে ধারণক্ষমতার প্রায় চার গুণ বেশি পর্যটক থাকায় তাদের সেবায় হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তিনি জানান, চলতি সপ্তাহের শুরুতেই বিচ এলাকায় থাকা পাঁচ শতাধিক হোটেল গেস্টহাউস রিসোর্টের সবগুলো বুকিং হয়ে গেছে। ফলে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পর্যটকদের জন্য তারা বিকল্প ব্যবস্থা করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি রুমে দুজন গেস্ট থাকতে পারবেন। কিন্তু এবার অতিরিক্ত পর্যটকদের সুবিধায় তারা এ নিয়ম শিথিল করেছেন। ফলে একই রুমে দুইজনের পরিবর্তে আগতরা নিজেদের সুবিধেমতো সদস্য নিয়ে অবস্থান করতে পারবেন। এতে অতিরিক্ত কোনো ভাড়া পরিশোধ করতে হবে না। আগে বুকিং ছাড়া এখন যারা নতুন করে আসছেন তারা রুম না পেয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় থাকার চেষ্টা করছেন। আর হোটেলে অতিরিক্ত ভাড়া ও রেস্তোরাঁয় যাতে বেশি দাম নেয়া না হয় সে বিষয়ে মালিক সমিতি নজর রাখছে।
আবুল কাশেম জানান, ছুটির এই চার দিনে তারা প্রায় ১৫০ কোটি টাকার ব্যবসা করবেন। তার ভাষ্য এখানে প্রত্যেক পর্যটক সব মিলিয়ে দিনে গড়ে কমপক্ষে তিন হাজার টাকা খরচ করেন। সে হিসেবে পাঁচ লাখ পর্যটকের কাছ থেকে চার দিনে তারা দেড় শ কোটি টাকার ব্যবসা করবেন।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, হঠাৎ করে পর্যটকের ঢল নামায় তারা খুশি। কারণ সেপ্টেম্বর মাসেও তারা হোটেল-মোটেলে সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ভাড়া ছাড় দিয়েও পর্যটক টানতে পারেননি। এখন উপচেপড়া ভিড় থাকায় ছাড়ের অফার তুলে নেয়া হয়েছে। তার পরও গোটা কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সকাল থেকেই সৈকতের সবগুলো পয়েন্টে উপচেপড়া ভিড় হচ্ছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ড কর্মীরা জানান, সৈকতের প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে লাখ লাখ পর্যটক ভিড় করছেন। এ ছাড়া মেরিন ড্রাইভ দিয়ে পর্যটকরা পাহাড়-ঝরনা ও প্রাকৃতিক গুহার দরিয়ানগর পর্যটনপল্লী, হিমছড়ি ঝরনা, ইনানী ও পাটোয়ারটেক পাথুরে সৈকত, টেকনাফ সৈকত, টেকনাফ মডেল থানার ভিতরে প্রেমকাহিনির মাথিন কূপ, কুদুমগুহা, নাফ নদী, জালিয়ারদিয়া, মিয়ানমার সীমান্ত, ন্যাচার পার্ক, রামুর বৌদ্ধপল্লী, মহেশখালী আদিনাথ মন্দির ও চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে ভিড় করছেন। ●
অকা/পর্যটন/ফর/রাত/১০ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 1 year আগে

