অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
রাজধানীর গুলশান ক্লাবে আয়োজিত ৫ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে বস্ত্রকলের মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ নেতারা বলেন, তুলা আমদানির ওপর ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) আরোপ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। প্রতিবেশী দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য এই নিয়ম করা হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বস্ত্রকলমালিকেরা সম্প্রতি। অনতিবিলম্বে ৭ জুলাইর মধ্যে এই অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘বাংলাদেশে আমার নিজের কারখানায় তুলা থেকে উৎপাদিত সুতার চেয়ে ভারত থেকে সুতা আমদানি করতে কম খরচ হবে। তাহলে আমরা নিয়মনীতি কি পার্শ্ববর্তী দেশকে সচ্ছল করার জন্য? তাদের কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য করছি? সরকার কি নিরলসভাবে কাজ করছে ওদের স্বার্থ রক্ষার্থে; এ বিষয়টি একটু ভাবার প্রয়োজন রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার ছাড়াও দেশি বস্ত্রকলে উৎপাদিত তুলার সুতা ও কৃত্রিম আঁশ এবং অন্যান্য আঁশের সংমিশ্রণে তৈরি সুতার ওপর উৎপাদন পর্যায়ে কেজিপ্রতি সুনির্দিষ্ট কর ৫ টাকা অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশ করেছে বিটিএমএ। এতে বক্তব্য দেন পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন, অমল পোদ্দার, হোসেন মেহমুদ, মো. খোরশেদ আলম, রাজিব হায়দার, সালেহউজ্জামান খান প্রমুখ।
বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘একদিকে ১৮ শতাংশ সুদহার, অন্যদিকে আমাদের পুঁজি থেকে ১-২ শতাংশ করে প্রায় ৫০ শতাংশ আয়কর কেটে নিলে আমাদের পক্ষে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব নয়।’
বিটিএমএ পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বস্ত্রকলমালিকেরা মরে যাচ্ছেন। এমনিতেই বিদ্যমান নানা চ্যালেঞ্জের কারণে অধিকাংশ কারখানামালিক তাঁদের কারখানা বিক্রি করে দিতে চান। তার সঙ্গে নতুন করে এআইটি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে যোগ হয়েছে।
বিটিএমএর আরেক পরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, দেশের বস্ত্রকল ধ্বংসের পরিকল্পনা নতুন নয়। এটি শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগেই। এ ধরনের নানা ষড়যন্ত্র চলছে বলে জানান তিনি।
বিটিএমএ পরিচালক হোসেন মেহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের কারণে ব্যবসায়ীরা দেশটি থেকে তুলা আমদানি বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন। এমন পরিস্থিতিতে দুই শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপ করা হলো। ফলে ব্যবসায়ীরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলে আমদানি বাড়ানোর পথে যেতে পারবে না।
বিটিএমএর তথ্যানুযায়ী, সংগঠনটির ১ হাজার ৮৫৮টি সুতাকল, উইভিং ও ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং বস্ত্রকল রয়েছে। এ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলার। দেশের শীর্ষ রফতানি আয়ের খাত তৈরি পোশাকশিল্পের সুতা ও কাপড়ের ৭০ শতাংশের জোগানদাতা হচ্ছে বস্ত্র খাত। ●
অকা/আখা/ফর/সন্ধ্যা/৫ জুলাই, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 5 days আগে