অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন আরও তিনটি রেল সংযোগ চালু হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে কাজ করছে রেলভবন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান দু’দেশের মধ্যে ৫টি রেল সংযোগ চালু রয়েছে। সর্বশেষ চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলসংযোগ চালুর পর এ পথে প্রাতি মাসে ১০ থেকে ১৫টি ট্রেন পাথর পরিবহন করছে। সময়ের সঙ্গে ট্রেন সংখ্যা বাড়ছে।
করোনা শনাক্তের শুরুর দিকে স্থলবন্দর বন্ধকালীন প্রতিমাসে শতাধিক ট্রেন যোগে বাংলাদেশে পণ্য পরিবহন করেছে ভারত। পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি পার্সেল ট্রেনও চালু হয়। রেলপথে পণ্য পরিবহন সময় সাশ্রয়ী। একসঙ্গে অধিক পণ্য পরিবহনে উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা খুশি। বাংলাদেশ রেলওয়ে পণ্য ট্রেন পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণের রাজস্ব অর্জন করে।
উত্তরপূর্ব ভারতের আগরতলার মধ্যে বাংলাদেশের ষষ্ঠ রেল সংযোগ আগামী বছরেই চালু হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ফেনী ও ত্রিপুরার বিলোনিয়ার মধ্যে বন্ধ রেল সংযোগটিও চালুর পদক্ষেপ নিয়েছে উভয় দেশ। কুলাউড়া-শাহবাজপুর হয়ে আসামের মৈষাশনের সঙ্গে সপ্তম রেল সংযোগের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। এটি সম্পন্ন হলে চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে পণ্যবাহী ট্রেন সরাসরি চলাচল করবে আসামসহ আশপাশের রাজ্যে। অপরদিকে, খাগড়াছড়ির রামগড়ে ফেনী নদীর ওপরে ভারতের নির্মিত মৈত্রী সেতুও উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে ত্রিপুরা হয়ে উঠবে উত্তরপূর্ব ভারতের প্রবেশমুখ।
রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭০ কিলোমিটার রেলপথের কাজ জোর কদমে চলছে। পদ্মা সেতু দিয়ে রেল যোগাযোগের পর উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপন হবে। ঢাকা-কলকাতায় সরাসরি ট্রেন চলাচলের সময়ও কমে আসবে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়েকে আমরা একটি জনবান্ধব যোগাযোগ ব্যবস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে ত্রিপুরার আগরতলা ও আখাউড়ার মধ্যে রেল সংযোগ স্থাপনে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ২০১৩ সালের ২১ মে সমঝোতা স্মারক সই হয়। ভারতীয় অর্থায়নে নির্মিত ১৫.৫৪ কিলোমিটার রেলপথের ৫ কিলোমিটার ভারতে এবং বাকী অংশ বাংলাদেশে। কলকাতা-আগরতলার দূরত্ব প্রায় ১৫৫০ কিলোমিটার। শিয়ালদহ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে আগরতলা পৌঁছোতে সময় লাগে ৩৮ ঘণ্টা। আখাউড়া-আগরতলা রেলপথটি চালু হলে দূরত্ব কমে গিয়ে ৬৫০ কিলোমিটারে দাঁড়াবে। সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৬ ঘণ্টায় কলকাতা পৌঁছোনো সম্ভব হবে।
২০১৬ সালে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় দু’দেশের মধ্যে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণ চুক্তি সম্পন্ন হয়। একই বছরে ৩১ জুলাই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিলো ২০১৮ সালে। সেই অনুযায়ী ২০১৮ সালের শেষাভাগে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে হুইসেল বাজার কথা ছিলো। তবে নানা জটিলতায় প্রকল্প কাজ পিছিয়ে যায় বছর দু’য়েক। সব বাধা ডিঙ্গিয়ে সর্বশেষ ২০২১ সালের জুন মাসেই বাংলাদেশ-ভারতের পতাকা উড়িয়ে দু’দেশের মধ্যে রেল সংযোগের সূচনা থামিয়ে দেয় অতিমারি করোনা।
#
সর্বশেষ হালনাগাদ 3 years আগে