অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
চট্টগ্রাম বন্দরে ফলবোঝাই দুই শতাধিক কনটেইনার ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন স্থলবন্দরে প্রবেশের অপোয় ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ৭৫ ট্রাক ফল আটকে রয়েছে। আমদানিকাররা খালাস না নেওয়ায় এই ফলগুলো আটকে আছে এবং দুই দিন ধরে বিদেশ থেকে ফল আমদানি বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে যশোরের বেনাপোলের বিপরীতে ভারতে পেট্রাপোল সীমান্তে আটকে আছে ফলবোঝাই ২৫টি ট্রাক।
ফল আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন দুই দিন ধরে ফল আমদানি বন্ধ ঘোষণা করায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফল আমদানিতে বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। এ কারণে ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি দেশে সব স্থল ও নৌবন্দরে দিয়ে ফল আমদানি বন্ধ ছিল।
৯ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। তাতে আমদানি খরচ বেড়ে গেছে আমদানিকারকদের। তাই বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন ফল আমদানিকারকেরা।
বেনাপোল কাস্টম হাউস সূত্রে জানা যায়, ৩০ জানুয়ারি বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৬৫০ মেট্রিক টন আপেল, কমলা, আঙুর, মাল্টা ও আনার আমদানি হয়েছে। এই ফল আমদানি থেকে সরকার রাজস্ব আদায় করেছে সাত কোটি টাকা। গত দুই দিন ফল আমদানি বন্ধ থাকায় সরকারেরও রাজস্ব আদায় ব্যাহত হয়েছে।
বেনাপোল বন্দর ও ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে যেসব খাদ্য আমদানি হয়, তার বড় অংশ রয়েছে আপেল, আঙুর, কমলা, মাল্টা ও আনার। সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর আগে এসব ফল আমদানির ওপর ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আদায় করত কাস্টমস কর্তৃপ। এতে প্রতি কেজি ফলে সরকারকে রাজস্ব দিতে হতো ১০১ থেকে ১১৫ টাকা। ৯ জানুয়ারি সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়। তাতে প্রতি কেজি ফল আমদানিতে শুল্ককর ১৫ থেকে ১৮ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৬ থেকে ১৩৮ টাকা।
এদিকে আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় আমদানি করা সব ধরনের ফলের দামও বেড়েছে খুচরা বাজারে। মানভেদে বিভিন্ন ধরনের ফলের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। যশোর শহরের সোনাপট্টি এলাকার খুচরা ফল ব্যবসায়ী মনির হোসেন জানান, আপেল, আঙুর, কমলা, আনারসহ আমদানি করা সব ধরনের ফলের দাম বেড়েছে। আর দাম বাড়ায় ফলের ক্রেতাও কমে গেছে। এতে বেচাবিক্রি একদমই কম।
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নূরউদ্দীন আহমেদ বলেন, বিলাসী পণ্য হিসেবে আমদানি করা ফলের ওপর গত এক বছরে তিন দফায় ৬০ থেকে ৭০ টাকা সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে এনবিআর। আপেল-আঙুর-কমলা হচ্ছে শিশুখাদ্য ও রোগীর পথ্য। এটা কীভাবে বিলাসী পণ্য হয়, সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।
বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, বিলাসী পণ্যের কোনো তালিকা নেই। তবে যেসব পণ্যে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়, সাধারণত সেসব পণ্যকে বিলাসী পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ●
অকা/আখা/ফর/রাত/৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 2 months আগে