অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
দেশীয় সিরামিক শিল্প রায় সিরামিক ও স্যানিটারি পণ্যে আরোপিত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ৩ দফা জানিয়েছে বাংলাদেশ সিরামিক উৎপাদক ও রফতানিকারক সমিতি (বিসিএমইএ)। এসোসিয়েশনের অন্য ২টি দাবি হচ্ছে- সিরামিক শিল্পে জ্বালানি গ্যাসের মূল্য পুনরায় বৃদ্ধি না করা এবং গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা। ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইনুল ইসলাম সরকারের কাছে এই ৩ দফা দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিসিএমইএ’র উপদেষ্টা মীর নাসির হোসেন ও সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ, সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিম সুমন, ডিরেক্টর রাশীদ মাইমুনুল ইসলাম, ডিরেক্টর ফারিয়ান ইউসুফ, জিএস ইরফান উদ্দিন প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাইনুল ইসলাম বলেন, সিরামিক খাতটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় আমদানি বিকল্প একটি শিল্পখাত। অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে উদ্যোক্তাদের অকান্ত প্রচেষ্টায় রফতানি এবং আমদানি-বিকল্প পণ্য হিসাবে দেশে ইতোমধ্যেই ৮০টিরও বেশি সিরামিক টেবিলওয়্যার, টাইলস্ ও স্যানিটারিওয়্যার শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পণ্য রফতানি করে যেমন মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে, তেমনি তৈরি পণ্যের আমদানি হ্রাস পাওয়ায় বছরে অন্তত ২০০ কোটি ডলারের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় ও অপচয় রোধ হচ্ছে।
তিনি বলেন, সিরামিক একটি গ্যাস নির্ভর প্রসেস ইন্ডাষ্ট্রি। সিরামিক শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাস কাঁচামালের উপকরণ হিসাবে গণ্য হয়। এই শিল্পে গ্যাসের বিকল্প কোন জ্বালানি ব্যবহারের সুযোগ নাই। পণ্য প্রস্তুত করতে নির্দিষ্ট মাত্রার চাপে কারখানায় ২৪ ঘণ্টাই নিরবচ্ছিন্নভাবে গ্যাস সরবরাহ থাকতে হয়। নির্দিষ্ট মাত্রার চাপে গ্যাসের সরবরাহের ঘাটতি হলে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় থাকা সকল পণ্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কোম্পানির বিপুল আর্থিক তি হয়। এর পরেও কারখানায় নিরবচ্ছিন্নভাবে গ্যাস সরবরাহ না থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে গ্যাসের বিল প্রদান করতে হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে প্রয়োজনীয় গ্যাসের চাপের অভাবে সময়মত পণ্য সরবরাহ করতে না পারায় বিশ্ব বাজারে নামী-দামী কোম্পানি আমাদের থেকে অর্ডার বাতিল করেছে।
তিনি আরো বলেন, বিগত প্রায় ১ বছর ২২ থেকে ২৫টি সিরামিক তৈজসপত্র, টাইলস্, স্যানিটারিওয়্যার সিরামিক ব্রিকস্ কারখানায় তীব্র গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে ব্যাপক আর্থিক তির সম্মুখীন হচ্ছেন । গ্যাসের কারণে নিবন্ধিত প্রায় ৫০টিও অধিক সিরামিক কোম্পানি তাদের বিনিয়োগ স্থগিত রেখেছে এবং নতুন স্থাপিত ৫টি কারখানা শুধুমাত্র গ্যাসের অপ্রতুল সরবরাহের কারণে উৎপাদন শুরু করতে পারছে না। ফলে এই সেক্টরের বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে, সেইসাথে বিপুল পরিমাণে কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের বেকার জনগণ। বিসিএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলেন, গ্যাস নির্ভর এই শিল্পে ক্রমাগত গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া একটি প্রধান সমস্যা।
৯ বছরে শিল্পখাতে প্রায় ৩৪৫ শতাংশ গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত ২০২৩ সালে শিল্পখাতে প্রায় ১৫০ শতাংশ গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে কেজি-প্রতি সিরামিক পণ্যের গড় উৎপাদন ব্যয় ১৮ থেকে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তৈরি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। ●
অকা/শিবা/ফর/রাত/৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 2 months আগে