অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
বৈশ্বিক মহামারিতে অনেক নারী উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন। বাংলাদেশে অফলাইন কিংবা অনলাইন, দুই শাখায়ই বেড়েছে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা। বিশেষ করে অনলাইন ব্যবহার করে অনেকে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছেন। করোনাকালে চারদিকে যখন লকডাউন চলছিল, অনেকে চাকরি হারিয়ে দিশেহারা, তখন ঘরে বসে পরিবারের নারী সদস্য হয়ে যান উদ্যোক্তা। আর করোনাকালে লেখাপড়া, ব্যবসা-চাকরি সব ক্ষেত্র হয়ে গেছে অনলাইন নির্ভর। ফলে ঘরে ঘরে তৈরি হয়েছে নারী উদ্যোক্তা। সব মিলিয়ে এখন একটা কম্পিউটার বা মোবাইল দিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই করা যাচ্ছে ব্যবসা। এতে করে ই-কমার্সের ঘটেছে ব্যাপক প্রসার। যে কারণে আইটি ক্ষেত্রেও বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ। মাহবুবা আক্তার (২৫) নামের এক উদ্যোক্তা জানান, ‘আগে কেবল ফেসবুক খুলে পোস্ট দেওয়া, লাইক দেওয়া কিংবা মন্তব্য লেখায় মধ্যে ছিল আইটি সেক্টরের জ্ঞান। কিন্তু এখন অনলাইনে ব্যবসা করতে গিয়ে কতকিছু শেখা যায়।
উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই) থেকে বানা গেছে, বিরাজমান করোনাকালে ই-কমার্সে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ঘরে বসে আয় করা যায় বলে নারীদের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য অনলাইন বিজনেস। করোনাকালে অনেক নারী ই-কমার্সে যুক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সচেতনতাও বেড়েছে। চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করছেন। ২০১৭ সালে উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই)-এর যাত্রা শুরু। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ১১ লাখ ২১ হাজার। এদের মধ্যে নারী উদ্যোক্তা ৪ লাখ। আর এসব নারী উদ্যোক্তাদের অধিকাংশই আত্মপ্রকাশ করেছে করোনাকালীন সময়ে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, এক দশকের ব্যবধানে নারী উদ্যোক্তা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির হোলসেল অ্যান্ড রিটেইল ট্রেড সার্ভে-২০২০-এর জরিপ ফল প্রকাশ করে বলা হয়েছিল যে, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা ছিল দুই লাখেরও বেশি যা ২০০২-০৩ অর্থ বছরে ছিল মাত্র ২১ হাজার। এ ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করে ব্যবসা করছেন আরো কয়েক লাখ উদ্যোক্তা।
সরকারি ও বেসরকারি গবেষণার বিভিন্ন তথ্য মতে, দেশে প্রায় তিন দশক আগে তথ্যপ্রযুক্তির যাত্রা শুরু হলেও আইটি পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে শীর্ষ পর্যায়ে নারীর অবস্থান এক শতাংশের নিচে। তবে করোনার কারণে এ ক্ষেত্রে ঘটেছে বিপ্লব। সরকারি হিসাবে, তথ্যপ্রযুক্তিতে কর্মক্ষেত্রে ১২ শতাংশ নারী কাজ করছেন। তার মধ্যে অধিকাংশই প্রাথমিক বা মধ্যম পর্যায়ের কাজ করেন। ‘বিজনেস প্রসেস আউটসোর্স-বিপিও’ তথ্যমতে, শিল্পে দেশে ৪০ শতাংশ নারী কাজ করছেন। বিশ্বব্যাপী বিপিও শিল্পের ৮ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার বাজারে বাংলাদেশের দখলে ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) এর দেয়া এক তথ্য মতে, অনলাইন লেনদেন ২০১৭ সালে ১২শ কোটি টাকার মতো ছিল। ১৮ ও ১৯ সালে যথাক্রমে ৩ ও ৪ কোটি টাকা করে লেনদেন বেড়েছে। ২০২০ এ এসে এই বাজার দুই হাজার কোটি টাকা বেড়ে ৪ হাজার কোটি টাকায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
#
অ/প্র/রাত, ৭ ফেব্রয়ারি, ২০২২
সর্বশেষ হালনাগাদ 3 years আগে