অর্থকাগজ প্রতিবেদন ●
২০২৩-২৪ অর্থ বছরে রফতানির আয় ছিল ৪৪ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার। বিশ্ব বাজারে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে (জুলাই-জুন) বাংলাদেশ ৪৮ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে, যা আগের অর্থ বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি। তবে একক মাস হিসেবে শুধু জুনে আগের অর্থ বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি আয় কমেছে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ রফতানি প্রতিবেদন থেকে ২ জুলাই এ তথ্য জানা গেছে।
অর্থ বছরের হিসাবে সবচেয়ে বেশি আয় এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে, যেখানে রফতানি হয়েছে ৩৯ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এর মধ্যে নিটওয়্যার রফতানি বেড়েছে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং ওভেন পোশাক ৭ দশমিক ৮২ শতাংশ। নিটওয়্যার খাত থেকে আয় এসেছে ২১ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার এবং ওভেন পোশাক থেকে ১৮ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে আয় হয়েছে ১ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার, যা ১০ দশমিক ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করে। এর মধ্যে শুধু চামড়ার জুতা থেকেই এসেছে ৬৭২ দশমিক শূন্য ৭ মিলিয়ন ডলার। প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ২১ শতাংশ এবং অন্যান্য চামড়াবহির্ভূত জুতা রফতানিতে প্রবৃদ্ধি ২৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। মানব চুল ও উইগ থেকে আয় বেড়েছে ২০ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং বাইসাইকেল রফতানিতে বেড়েছে ৪১ দশমিক ১৪ শতাংশ।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে জাহাজ, নৌযান ও ভাসমান কাঠামো রফতানিতে, যেখানে আয় হয়েছে ২ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলার। আগের বছর যা ছিল মাত্র ১৪ লাখ ডলার। কৃষিপণ্য থেকে এসেছে ১ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার, যা ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। তবে এ খাতের অভ্যন্তরে কিছু উপখাতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিও দেখা গেছে। উদাহরণস্বরূপ তাজা সবজিতে রফতানি কমেছে ২৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ, বেতেলপাতায় ৩৪ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং তৈলবীজে ১৮ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। একইভাবে কাঠ ও কাঠজাত পণ্য রফতানিতে প্রবৃদ্ধি কমেছে ৩০ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ এবং কাচ ও কাচজাত পণ্যে ৩৮ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে সামগ্রিকভাবে আয় কমেছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ, যদিও পাটের ব্যাগ রফতানি কিছুটা বেড়েছে।
মাসওয়ারি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জুনে রফতানি আয় হয়েছে ৩ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ কম। এর পেছনে ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটি ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তাদের শাটডাউন কর্মসূচির কারণে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকাকে অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, তৈরি পোশাক খাতের স্থিতিশীলতা এবং কিছু নতুন খাত যেমন জাহাজ রফতানির উল্লম্ফন বাংলাদেশের রফতানি সম্ভাবনাকে আরো শক্তিশালী করেছে। তবে কৃষিপণ্য ও কিছু প্রাথমিক খাতে অব্যাহত নেতিবাচক প্রবণতা বৈচিত্র্য আনার প্রয়োজনীয়তাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। এজন্য নীতিসহায়তা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং বাজার বহুমুখীকরণের ওপর জোর দেয়ার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। ●
অকা/বাণিজ্য/ফর/দুপুর/৩ জুলাই ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
সর্বশেষ হালনাগাদ 1 week আগে